ছুটি নয়, সুরক্ষা সরঞ্জাম চায় নার্সরা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রোগীদের সেবা দিতে নার্সদের জন্য মানসম্মত পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা হয়নি। অনেক নার্স এখন পর্যন্ত আগের পিপিই ব্যবহার করছেন। সরকার সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবস্থার চেষ্টা করছে। তবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক নার্স করোনার ঝুঁকিতে আছে। রোগীদের খুব কাছে থেকেই নার্সদের সেবা দিতে হয়। তারা যদি সুরক্ষিত না থাকে, তাহলে সেবা দান প্রক্রিয়া চরমভাবে ব্যাহত হবে। এ সংকট মোকাবেলায় নার্সসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অতিদ্রুত সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে আজ ববার (২২ মার্চ) দুপুরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সেবা মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইসমত আরা পারভীন।

তিনি আশঙ্কা করেন, ‘যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা না হয় তাহলে এমন সময়ও আসতে পারে, হাসপাতালে রোগী থাকবে, নার্সরা সেবা দিতে চাইলেও সেবা দিতে পারবে না। তাই সরকারের উচিত অতি দ্রুত মানসম্মত পিপিইসহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করা।

তিনি আরও জানান, নার্সরা অভিযোগ করছে, কয়েকটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বলছে নিজ উদ্যেগে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এটা কখনোই সম্ভব নয়। অধিকাংশ হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম না থাকায় নার্সরা বেশ ঝুঁকিতে আছে। রোগীকে স্যালাইন, ইনজেকশন ও ওষুধ খাওয়ানোসহ রোগীদের সব প্রয়োজনে নার্সদেরই কাছে থাকতে হয়। তাই তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা খুব জরুরি।

‘আমরা জেনেছি পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু এ সরঞ্জাম নার্সরা কবে হাতে পাবে, তা আমরা নিশ্চিত নই। আমার দাবি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করা। তা না হলে করোনা ভাইরাসের এ সংকট আরো ভয়াবহতার দিকে চলে যাবে। তাই মানবতাকে বাঁচাতে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে, শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলেই হবে না’, যোগ করে ইসমত আরা পারভীন।

তিনি বলেন,‘ ইতিমধ্যে অধিকাংশ হাসপাতালে করোনা ইউনিট খোলা হয়েছে। আর কিছু স্পেশালাইড হাসপাতাল আইসোলেশনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখুন, সরকারেরও নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। হঠাৎ করেই সব কিছু নিশ্চিত করা বা সামাল দেওয়া সম্ভব না। বিশেষ করে ইমার্জেন্সিতে, কোয়ারেন্টাইনে, আইসোলেশনে কিংবা করোনা রোগীদের যারা সেবা দিচ্ছেন। আমাদের উচিত প্রথমে রোগীদের আইসোটেল করা, আক্রান্তের সংখ্যা নিশ্চিত করা এবং তাদের সুরক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে পারলেই করোনা প্রতিরোধ আমাদের জন্য সহজ হবে। সকল স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য সুরক্ষা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে, না হয় আমরা খুব বেশি সুফল পাবো না। সাথে সাথে করোনা ইউনিটে বা আইসোলেশনে কম বয়সী নার্সদের দায়িত্ব না দেওয়া চেষ্টা করতে হবে, গর্ভবতী বা অসুস্থ নার্সদের দায়িত্ব না দিলেই ভালো কিংবা যাদের হাই পেশার বা ডায়াবেটিস আছে তাদের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, মানুষ বাঁচার জন্য মানুষ নদী পথে আসছে। তাদের কোন পরীক্ষা না করেই দেশে প্রবেশ করেছে। যা আমাদের জন্য বড় হুমকি। এদিকে প্রশাসন বলছে বিদেশ ফেরত অনেকের নাম ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের সচেতনতার অভাবেই আজকে বাংলাদেশেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে। আমাদের পরিকল্পনার যথেষ্ট অভাব ছিল। তাই বিদেশ থেকে যারা আসবে তাদের শরীরে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের ছাড়া যাবে না। কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে তাদের সব পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সেনা বাহিনীকে আরো বেশি যুক্ত করা যেতে পারে। এতে সেবা দান প্রক্রিয়া আরো সহজ হবে।

বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নানান বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোন নার্স ছুটি চায় না, জীবন বাজি রেখে সেবা দিতে চায়, এজন্য নার্সরা দ্রুত সুরক্ষা সরঞ্জাম চায়। সব সংকটে নার্সরা মানুষের সেবা এগিয়ে ছিলো এবং থাকবে। আমি বলতে পারি, যে কোন স্বাস্থ্য সংকটে নার্সরা অগ্রণি ভূমিকা রেখেছে।

আপনার মতামত দিন :