ভয়াবহ পিপিই সঙ্কটে মৃত্যুর মিছিলে মার্কিন স্বাস্থ্যকর্মীরা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৬:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২০

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই। বিশ্বের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন সবচাইতে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনকে ছাড়িয়ে গেছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮৩৬। যা চীন ও ইতালির চেয়ে বেশি। এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নিরলসভাবে কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুর হারটা দেখে অনেকটা আঁতকে ওঠার মতোই।

গত সপ্তাহে পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে মিসোরি রাজ্যের সেন্ট লুইসের সেন্ট ম্যারি হসপিটালের নার্স জুডি উইলসন গ্রিফফিনের। পরে তিনি মারা গেছেন। জর্জিয়ায় দু’জন স্বাস্থ্যসেবাকর্মী দায়িত্ব পালনকালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৮ বছর বয়সী নারী কাজ করতেন ডোনালসলভিলে হসপিটালে এবং ৪২ বছর বয়সী অপর একজন পেডমন্ট নিউনান হসপিটালে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যানহাটনে ৪৮ বছর বয়সী একজন নার্স করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কয়েকদিন আগে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর গত মঙ্গলবার তিনি মারা যান।

জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ায় অন্তত ৩৫ জন ডাক্তার এবং নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। তবে অন্যান্য রাজ্যে বেশি পরিমাণে এটি পরীক্ষা করা হলে সেই সংখ্যা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। ওয়াশিংটনেও চিকিৎসক এবং নার্সদের অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সঙ্গত কিছু কারণে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, ইলিনইস, নিউ জার্সি, নিউইয়র্কসহ অন্যান্য রাজ্যেও। করোনা পরীক্ষার কিট এবং পিপিই সঙ্কট আরো প্রকট হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নার্স এবং হাসপাতালে কর্মরত অন্যরা বেশ কিছুদিন থেকেই ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) অভাবের কথা বলে আসছেন। সুরক্ষা স্যুট, মাস্ক, গ্লোভস, হেড কভার প্রয়োজনের তুলনায় পাচ্ছেন না তারা। সে কারণে অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।

সিটলের একটি হাসপাতালের নার্স ডন আলদিনজার বলেন, আমাদের হাসপাতালের প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছে। আমাদের বিশ্বাস, এই সঙ্কট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকদের পিপিই সরবরাহ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, তারা সুস্থ না থাকলে অন্যদের সেবা দেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে।

এদিকে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মার্কিন সিনেটে দুই লাখ কোটি (দুই ট্রিলিয়ন) ডলারের বিল পাস হয়েছে । ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মহামারিতে চাকরি হারানো কর্মী ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাস হওয়া হওয়া সবচেয়ে বড় অঙ্কের বিল এটি।

আপনার মতামত দিন :