হান্টাভাইরাসের লক্ষণ-প্রতিকার, কিভাবে ছড়ায়?

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২০

করোনার আক্রমণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাই অবগত এবং চিন্তিত। এরই মধ্যে নজর কেড়েছে নতুন আরেকটি ভাইরাস। চীনের গ্লোবাল টাইমসের একটি নিউজে হান্টা ভাইরাসের আক্রমণে একজন বাসযাত্রীর মৃত্যুর খবর বেড়িয়েছে। বাসের সকল যাত্রীকেই ইতোমধ্যে টেস্ট করে নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

তবে, হান্টাভাইরাসের আক্রমণ এটাই প্রথম নয়। ১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম একটি শ্বাসকষ্টজনিত ব্যাধি ধরা পড়ে। তারপর, ২০১২ সালের পহেলা নভেম্বর ইয়োসেমাইট জাতীয় উদ্যানে ১০ জন হান্টাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। সর্বশেষ, ২০১৭ সালে ১৭ জন হান্টাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

হান্টাভাইরাস মূলত কী এবং কিভাবে ছড়ায়?

হান্টাভাইরাস এক ধরণের সিঙ্গেল স্ট্র‍্যান্ডেড, এনভেলপড, নেগেটিভ সেন্স আর এনএ যুক্ত ভাইরাস। এরা সাধারণত রোডেন্ট জাতীয় প্রাণীদেরকে আক্রান্ত করে কিন্তু প্রাণীর দেহে রোগ সৃষ্টি করতে পারে না। রোডেন্ট বলা হয় মূলত সামনের দিকে তীক্ষ্মদাঁত বিশিষ্ট প্রাণিদেরকে। যেমন: ইদুর। এইসকল প্রাণীর লালা, রক্ত মূত্রের সংস্পর্শে আসলে মানুষের দেহেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

হান্টাভাইরাসের আক্রমণে কী হয়?

হান্টাভাইরাস মানুষের দেহে কয়েকটি রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে Hantavirus Hemorrhagic Fever with Renal Syndrome (HFRS) এবং Hantavirus Pulmonary Syndrome (HPS)

HFRS হলে কী হয়?

আক্রান্ত হওয়ার ১-২ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে আছে মাথা, পিঠে ও পেটে ব্যথা, বমি এবং কাপুনি দিয়ে জ্বর। অবস্থা অবনতির দিকে গেলে নিম্ব রক্তচাপ, শক থেকে কিডনি বিকল পর্যন্ত হতে পারে।

HPS হলে কী হয়?

এটা অনেকটাই সাধারণ ফ্লু এর মতোই। জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট। যা আমরা করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও দেখেছি। HPS এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই রোগে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হয়ে ফুসফুসে পানি জমে যাওয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।

আশার কথা হচ্ছে হান্টাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না বলেই এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ এটি ছোয়াঁচেও নয়। শুধুমাত্র কিছু প্রাণী থেকে মানুষের ছড়াতে পারে।

প্রতিকার:

যেহেতু এটি ছোঁয়াচে নয় এবং প্রাণী থেকে ছড়ায়। তাই প্রতিকারটাও খুব সহজ। রোডেন্ট অর্থাৎ ইদুর জাতীয় প্রাণী থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত হান্টাভাইরাসের অফিশিয়াল কোনো ভ্যাক্সিন আবিস্কার হয়নি। ১৯৯০ সাল থেকে একটা “হান্টাভ্যাক্স” নামে একটি ভ্যাক্সিন তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে।

সর্বশেষ বলতে চাই, আশা করছি হান্টাভাইরাস করোনা ভাইরাসের মতো ভয়াবহ কিছু হবেনা। তাই প্যানিক না করে সাবধান থাকি। আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থণা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে করোনা ভাইরাস সহ সবধরণের বিপদ থেকে হেফাজত করুন।

মুজতাবা তামিম আল মাহদি

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ

আপনার মতামত দিন :