১২ বছর মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ : করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য খাত কতটুকু প্রস্তুত?

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৫:২১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২০

বর্তমানে পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ কতটুকু প্রস্তুত?

সম্প্রতি সময়ে আমাদের দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য দাবি করছেন করোনার কিট এক মাসের মধ্যে বাজারে আনবেন তার পাশাপাশি বিদেশ থেকেও কিট নিয়ে আসার কথা বলছে সরকার কিন্তু করোনা সহ সকল রোগ নির্ণয় কারী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ নেই বিগত এক যুগ তাহলে কে করবে এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা?

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর যেখানে একমাত্র ভরসা সেই প্রতিষ্ঠানেই কাজ করছে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট বৃন্দ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্যাম্পল কালেকশন থেকে শুরু করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন দেশের মানুষের স্বার্থে। টিভিতেও বিভিন্ন পত্রিকাতে প্রায়ই প্রতিবেদন চোখে পড়ে কোটি কোটি টাকার সরঞ্জাম কেনা হয়েছে সরকারি হাসপাতালে শুধুমাত্র মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগের অভাবে যন্ত্রপাতি গুলো পড়ে আছে আবার অনেক মেশিন নষ্টের পথে।

সম্প্রতি সময়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন এ একটি প্রতিবেদন দেখলাম স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিজ জেলা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্যাথলজি বিভাগে এক্সরে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই সহ প্রায় ৬০ কোটি টাকার সরঞ্জাম কেনা হয়েছে ওই হাসপাতালে কর্মরত একজন টেকনোলজিস্ট বলছেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে জনবলের অভাবে এসব পড়ে আছে আর গরিব লোকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য যেতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে!

গতবছর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল সেখানে উল্লেখ ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স ও পাঁচজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা (১:৩:৫) কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের চিত্র বলে ডাক্তারের বিপরীতে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদের অনুপাত খুবই কম। বিগত একযোগে হাজার হাজার ডাক্তার নার্স নিয়োগ হলেও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে কোন নিয়োগ‌ই হয়নি তাহলে কিভাবে মানুষ রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে সুচিকিৎসা পাবে?

বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায় বাংলাদেশের ৯০ হাজার ডাক্তার আছে তাহলে আপনারাই হিসাব করুন কতগুলো মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট লাগবে? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন সকল সমস্যা নিরসন করে ২০১৯ সালের মধ্যে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

এখন পর্যন্ত বেকার হাজার হাজার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। নার্সদের মত হাজার হাজার নিয়োগ হলে কমবে বেকারত্ব। করোনা সহ সকল রোগ নির্ণয়ের কথা বিবেচনা করে অতি দ্রুত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ হলে যেমন কমবে বেকারত্ব তেমন বাড়বে স্বাস্থ্য বিভাগের সেবাসমূহ। অল্প খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারবে বাংলাদেশের মানুষ আর সুনাম হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এবং বাংলাদেশ সরকারের!

মোঃ আবুল কালাম আজাদ
মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি মেডিসিন)

আপনার মতামত দিন :