করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ড্যাবের‌ ৫ দফা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২০

করোনাভইরাস কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ এবং মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

ড্যাব বিবৃতিতে উল্লেখ করে, করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন। এই পন্থা যথাযথভাবে কার্যকর করার জন্য নিম্ন আয়ের মানুষদের অন্তত দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠন নিজ উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও সরকারকে আরও জোরালো টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জোর দাবি জানান।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নতুবা উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় তথা সরকার দায়ী থাকবে।

করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান ও বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে চারজন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও সারা দেশের চিকিৎসগণ যেভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন তার জন্য ড্যাবের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো জয় বিবৃতিতে।

পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো-

১. যাদের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে তাদের প্রত্যেককে অনতিবিলম্বে পরীক্ষা করা হোক ও যথাযথভাবে চিকিৎসা করা হোক।

২. করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বা এতে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি বন্ধ করা হোক।

৩. স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের সরকারি উদ্যোগে বীমা করা হোক।

৪. যেহেতু সমাজিক সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু অন্ততপক্ষে জেলা পর্যায়ে রোগী সনাক্তকরণের ব্যবস্থা এবং করোনা রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।

৫. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত বহিঃবিভাগে করোনা রোগীদের জন্য অত্যাবশকভাবে আলদা কর্নার করা হোক।

ড্যাবের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন দেশ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এই মহাবিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নির্বিকার, তাদের কার্যক্রম কাগজে কলমে, মাঠ পর্যায়ে দেরিতে হলেও আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনের চেষ্টা করলেও রোগী সনাক্তকরণ বা চিকিৎসার ব্যাপারে চরম উদাসীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শুরু থেকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা না করায় ধীরে ধীরে চরম জটিল রূপ ধারণ করেছে।

নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ও সরকার কর্তৃক বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার চরম সমালোচনা করেছেন।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক করোনাভইরাসে সংক্রমিত কোভিড-১৯ কে মহামারী ঘোষণার পর থেকেই ড্যাব বিভিন্ন সেমিনার, বিবৃতি এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নিকট স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের ব্যাক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় উক্ত অপরিহার্য বিষয়ে কর্ণপাত করছেন না। বাংলাদেশের চিকিৎসকগণ তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অদ্যাবধি নিরলসভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদাসীন আচরণের জন্য ইতিমধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টিনে যেতে বাধ্য হয়েছে।

তারা আরও বলেন, তদুপরি কোনো চিকিৎসক সেবা প্রদানে বিরত হয়নি। অথচ আমরা অবাক বিষ্ময়ে লক্ষ্য করছি করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই, মাস্ক এন-৯৫) চিকিৎসকদের জন্য নিশ্চিত না করে সরকারের অন্য বিভাগের ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আপনার মতামত দিন :