দেশে নতুন করে ৩৫ জন আক্রান্ত : আইইডিসিআর

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১০:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২০

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ৩৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে।

সোমবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

ডা. ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরসহ দেশের বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে ৪৬৮ সন্দেহভাজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৩৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন এবং নারী ৫ জন। নতুন যাদের শরীরে এ ভাইরাস ধরা পড়েছে তাদের ১২ জনই নারায়ণগঞ্জের। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ জনে। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে নতুন করে কেউ সুস্থ হননি। ফলে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩৩-ই আছে।

এই ব্রিফিংয়ের আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক অনুষ্ঠানে ভিন্ন তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৯ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। ৪ জন মারা গেছেন।

এ বিষয়টির ব্যাখ্যা করে স্বাস্থ্য অধিফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নামের বিভ্রাটের কারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তখন মৃতের সংখ্যা ৪ জন জানিয়েছিলেন। তাছাড়া আক্রান্তের সংখ্যাও তখন পর্যন্ত ২৯ জনই ছিল। এর মধ্যে নতুন কজনের তথ্য এসেছে, ফলে ৩৫ জন বলছি এখন। এ তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।

আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, নতুন আক্রান্ত ৩৫ জনের মধ্যে ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, এরপর ৬ জন ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী। এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেশে শনাক্তকৃত মোট ১২৩ জন করোনা রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৬৪ জন রাজধানী ঢাকার।

ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ৩০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে ৬৬ হাজার ৫১১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ২৯৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সর্বমোট ৬৬ হাজার ৮১০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৪৪৩ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়। অনেককে ছাড়পত্র দেয়ায় বর্তমানে ১০৭ জন আইসোলেশনে রয়েছেন।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রায় নিয়মিত কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর দিচ্ছিল আইইডিসিআর। এরমধ্যে ৫ এপ্রিল একবারে ১৮ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়। আর তার পরদিন অর্থাৎ আজ আবার নতুন করে ৩৫ জন শনাক্ত বলে জানানো হলো। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর একদিনে এটিই সর্বোচ্চ আক্রান্ত হওয়ার খবর।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সে বিষয়টি মাথায় রেখে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সর্বশেষ মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আহ্বানও রয়েছে। করোনাভাইরাস ঠেকাতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বহু দেশই এর আগে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯০ জন। বিশ্বজুড়ে করোনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৯ হাজার ৪৪৪ জন। তবে আড়াই লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

আপনার মতামত দিন :