তৃতীয় লিঙ্গের সাথে ভালোবাসা ভাগ করে নিয়েছে গণবি’র শিক্ষার্থীরা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০

পার্ক বা উদ‍্যানে ঘুরে নয়, নয় কোন দর্শনীয় স্থান ঘুরে, ধামরাইয়ে অবস্থিত তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটির সাথে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন।

গতকাল ১৪ই ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার ডাঃ এড্রিক বেকার মানব কল্যাণ সংঘের আয়োজনে কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

সহযোগি সংগঠন হিসেবে ছিল এসো সচেতন হই সোসাইটি (এসই) এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি অনন্যা বনিক এর সাদা কালো হিজরা উন্নয়ন সংস্থা।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসো সচেতন হই সোসাইটি এর চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তিনি বৈচিত্র্যময় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর নৈতিক শিক্ষা, মানবিকতা, কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেন।

একটি দেশের উন্নয়ন যেমন একক কোন মানদন্ডের উপর নির্ভর করে বলা যায় না, তেমনি কোন বিশেষ জনগোষ্ঠির সাবির্ক কল্যাণ ব্যতিরেখে একটি দেশকে নৈতিক আদর্শীক দেশ বলা যায় না। অনেক দিন ধরে রাষ্টীয়ভাবে এই বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠি হিজড়াদের উপর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও কার্যকরী কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রুপ নেয়নি। পথে ঘাটে বিভিন্ন জায়গায় যখন এই জনগোষ্ঠি দু’বেলা দু’মুঠো ভাত, বাসা ভাড়া এবং জীবন চলার জন্য আমাদের কাছে হাত বাড়িয়ে দেয় তখন আমরা অনেকেই ওদের প্রতি করে বসি নেতিবাচক মন্তব্য। আর যদি সাহায্য চাওয়ার পক্রিয়াটি হয়ে থাকে ভিন্ন ঢং এর, তাতে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করতেও ভুল করেন না কেউ কেউ। কিন্তু আমরা যদি ভেবে দেখি, ওদের জন্য এই রাষ্ট্র এই সমাজ এই পরিবার ওদের জীবন চলার জন্য কি কোন বিশেষ ব্যবস্থা করে দিয়েছি? দিয়ে থাকলেও তা খুবই সামান্য।

ডাঃ এড্রিক বেকার মানব কল্যাণ সংঘের পরিচালনা কমিটির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম বলেন,আমরা মনে করি হিজড়াদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য মানেই হিজড়া সন্তানটি পরিবারের বোঝাস্বরুপ। আমরা অনেকদিন ধরেই এই কমিউনিটির জন্য কোন কর্মসংস্থান তৈরির চেষ্টা করছি। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে তা সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, হিজড়া সন্তানটিকে তার পরিবারে অর্থাৎ বাবা-মা’র সাথে একসাথে থাকতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে প্রতিবেশী বা আত্ময়ীস্বজনের নেতিবাচক মন্তব্য। এমনকি হিজড়া সন্তানসহ পরিবারটিকে একঘরে বা বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি করার কারণে পরিবার থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয় হিজড়া সন্তানটি। মা-বাবা, ভাই-বোনের মায়ামমতা ভালোবাসা ছেড়ে একসময় আশ্রয় নিতে হয় হিজড়া কমিউনিটিতে। শুরু হয় তার জীবনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। একসময় হয়ে পড়ে এই সমাজের মানুষের চোখে উপহাসের পাত্র। আমরা কখনো ভাবী না হিজড়া সন্তানটিও আমাদের সন্তান।

নানান গল্প ও অভিজ্ঞতা বিনিময় শেষে উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয় উপস্থিত তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মাঝে।

আপনার মতামত দিন :