একদিন খাবার দিলেই হবে না, তাদের প্রতিদিন খাবার প্রয়াজন-সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম

Arup Arup

Sarker

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২০

বাংলাদেশর মত উন্নয়নশীল দেশের মানুষগুলো যারা গ্রামে কোন কাজ পাচ্ছিল না, আবার তাদের স্থানীয় পর্যায়ে অন্যের কাছে হাত পাততেও লজ্জা পাচিছল তারাই ঢাকা শহরে এসো ভীড় করেছিল। করোনা ভাইরাসের মহামারি গোটা বিশ্বকে স্থবীর করে দিয়েছে। বাংলাদেশেও তার নেতিবাচক প্রভাব ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে যাচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে গ্রাম থেকে ঢাকায় ছুটে আসা সকল ছিন্নমূল মানুষগুলো অধিকাংশ সময় এখন না খেয়ে দিন পাড় করতে হচ্ছে। ঐসকল মানুষগুলো এখন শহরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে তীর্থের কাকের মত প্রহরগুনতে থাকে কারো দেয়া খাবারের জন্য। আর যারা ফুটপাথে পলি টানিয়ে ঘর বানিয়ে বসবাস করে তারাও আজ না খেয়ে দিন পাড় করছে।

এই সমস্ত মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে ০৫ মে রোজ মঙ্গলবার শিশুপার্ক, মৎসভবনের পাশে, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের পাশে আইডিয়াল জোন, মতিঝিল মডেল স্কুলের পাশে যারা পলি টানিয়ে ঘর বেধে বসবাস করছে তাদেরকে এবং কাকরাইল, বিজয়নগর, জোনাকী হলের পাশে, ফকিরাপুল এবং আরামবাগ খাবারের জন্য বসে থাকা ঐসব মানুষগুলোর মাঝে ৩৫০ প্যাকেট খাবার বিতরণ করে সামাজিক সংঘটন ‘এসই’। এসই সরাসরি খাবার বিতরণের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে।

খাবার বিতরণ করছে ”এসই”

এসই এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, এইসব মানুষগুলো সহায় সম্বলহীন। ওরা এখন কারো না কারো খাবার দেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ ওদের জন্য খাবার দেয়া প্রয়োজন। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত “এসো সচেতন হই সোসাইটি”(এসই) ব্যক্তিগত অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। করেনা ভাইরাস সংকটকালে বেশ কিছু কাজ করেছে ‘এসই’।

তিনি আরো জানান, যেহেতু ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে যাচ্ছি, অর্থের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আজকের খাবার বিতরণের অর্থায়নের ক্ষেত্রে এসই ছাড়াও ইঞ্জনিয়ার তারিক শাহরিয়ার এগিয়ে আসেন। কয়েকজন প্রাবাসী এবং ইঞ্জনিয়ার তারিক শাহরিয়ার কয়েকজন বন্ধুবান্ধব সহযোগীতা করেন। করোনা পরিস্থিতি একটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা বলে মনে হচ্ছে। তাই সমাজের প্রত্যেকেরই এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কেউ কেউ এইসব অসহায় মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে পারেন। খাবার তিরণের সময় সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একদিন খাবার দিলেই হবে না যারা অসহায় তাদের প্রতিদিনের খাবার প্রয়োজন। সুতরাং সরকারের দীর্ঘমেয়াদী একটি সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।”

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ঐসব মানুষদেরকে একটি নির্ধারিত জায়গায় রেখে খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, এসব অসহায়দের মধ্যে যারা ছিন্নমূল রয়েছে তাদেরকে সরকার কর্তৃক এমন ব্যবস্থা করা হউক যারা নির্দিষ্ট কয়েকটি রাস্তায় বা জায়গায় থাকবে, তাতে যারা খাবার দিবেন তারা সহজেই খাবার বিতরণ করতে পারবেন এবং বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভাগ করে খাবার দিতে পারবেন। তাতে সব অসহায় মানুষগুলো খাবার পাবে। উল্লেখ্য, ক’দিন আগে কমলাপুর ঠোকাইদের মাঝেও খাবার বিতরণ করে এসই। করোনা পরিস্থিতিতে ‘এসো সচেতন হই সোসাইটি (এসই)’ এর কার্যক্রম চলমান থাকবে।

করোনা পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে আরো কঠিন সময় পার করতে হবে এইসব অসহায় মানুষদের। ধনাট্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওদের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

আপনার মতামত দিন :