রোগ নির্নয়কারী মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ বন্ধ প্রায় এক যূগ ধরে Emon Emon Chowdhury প্রকাশিত: ৪:১০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২০ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সেম্পল কালেকশন থেকে শুরু করে সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা যারা করেন সেই মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ প্রায় এক যূগ ধরে বন্ধ। WHO(World Health Organization) যেখানে বলছে “টেস্ট ‘টেস্ট’ টেস্ট” সেখানে বাংলাদেশে এর চিত্র কিছুটা ধীর গতির বলে অভিযোগ রয়েছে।দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে ধীর গতিতে চলছে করোনার সেম্পল কালেকশন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে যে গত এক দশকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দফায় দফায় কয়েক হাজার ডাক্তার ও নার্সদের নিয়োগ হলেও মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন এবং সরকারি ভাবে তাদের পদবী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন এমনকি সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকগনও তাদের টেকনিশিয়ান বলে সম্বোধন করেন যা তাদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে ফলশ্রুতিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্টগন অবহেলিত হচ্ছে বলেই তাদের অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বলেছেন ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউ এইচ ও) যেখানে ডাক্তার:নার্স:টেকনোলজিস্ট =১:৩:৫ অর্থাৎ ১ জন ডাক্তারের বিপরীতে ৩ জন নার্স ও ৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা সেখানে আমাদের দেশের অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো। বাংলাদেশ গ্রাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আমান উল্লাহ আমান এই দাবী জানান যে বর্তমানে দেশে দশ হাজারেরও অধিক পাসকৃত গ্রাজুয়েট বেকার টেকনোলজিস্ট অত্যন্ত দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।দেশের উন্নতমানের ল্যাব স্থাপন করে সেগুলোতে যদি এসব গ্রাজুয়েটদের উন্নত বিশ্বের মতো সাইন্টিফিক অফিসার পদে নিয়োগ দিয়ে গবেষণা করার সুযোগ দেওয়া যায় তবে দেশেই অনেক উন্নত মানের টেস্ট কিট ও রিয়েজেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা দিয়ে দেশে উন্নত বিশ্বের আদলে সম্ভব হবে পরীক্ষা নিরীক্ষা কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এখন পর্যন্ত ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ২০১৩ সালের নিয়োগটি পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়নি। বাংলাদেশ গ্রাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন করোনা ভাইরাস সনাক্তকরনে ও সঠিক ভাবে স্যাম্পল সংগ্রহ এর উপর নির্ভর করবে পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ ফলাফল,আর একটি পজিটিভ ফলাফল এর ফলে অনেক কিছুই জড়িত,তাই রোগ নির্নয়ের ফলাফল লের উপরেই নির্ভর করবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত কি হবে।কোন এলাকায় করনা ভাইরাস এর উপস্থিতি রয়েছে সেটা নির্ভর করে টেস্ট এর ফলাফল এর উপর তাই সেই টেস্ট যে টেকনোলজিস্টগন করবে তাদের গুনগত মান নিয়ে কথা চিন্তা করতে হবে, গুনগুন মান সম্পন্ন স্যাম্পল সংগ্রহ করার জন্য, গুনগত মান সম্পন্ন টেস্ট করার জন্য, সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এর জন্য সরকার ইন্সটিটিউট অফ হেলথ্ টেকনোলজি তে ডিপ্লোমা মেডিক্যাল টেকনোলজি এর পাশাপাশি বি এস সি মেডিকেল টেকনোলজি চালু করেছেন ২০০৮ সাল থেকে কিন্তু আজ ১২ বছর যাবত ডিপ্লোমা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ না দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর প্রশাসন এর উদাসিনতার জন্য অদক্ষ ও অপর্যাপ্ত জনবল দিয়ে দ্রুত করোনা সনাক্তকরনে ধীরগতি হচ্ছে।যার ফলে সরকারের পক্ষে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি এস সি সম্পন্নকারী কোন গ্রাজুয়েটসদের কাজে লাগাতে পারেনি সরকার।একটি সঠিক রিপোর্ট নির্ভর করে দক্ষ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের উপর আর একজন দক্ষ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট তৈরি হয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ক্লিনিক্যাল এক্সপেরিয়েন্সের মাধ্যমে যা বাংলাদেশের মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের রয়েছে। এক জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের ৪ বছর মেডিক্যাল টেকনোলজি( ল্যাবরেটরি মেডিসিন) এর উপর ডিপ্লোমা করতে হয়।ডিপ্লোমা শেষ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪ বছরের বি এস সি মেডিকেল টেকনোলজি (ল্যাবরেটরি মেডিসিন) পড়তে হয়। সঠিকভাবে চিকিৎসার পুর্বশর্ত হল সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়। আর দক্ষ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ছাড়া সঠিক ও সুনির্দিষ্ট এবং নির্ভুল রোগ নির্ণয় সম্ভব নয় তাই রোগ নির্ণয়ের এই সেকটরের দিকে অবশ্যই সরকারের নজর দিতে হবে ও আধুনিকায়ন করতে হবে তাহলে প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে ও দ্রুত রোগী সুস্থতা লাভ করবে।কিন্তু অভিযোগ রয়েছে দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোন স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড,নেই কোন স্বতন্ত্র কাউন্সিল,এমনকি পাকিস্তান আমলের স্টেট মেডিকেল ফেকাল্টি নামের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনগড়া একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে চলছে শিক্ষা ব্যবস্থা যার ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন যেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সকল প্রকার সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করে ১৬ কোটি মানুষের রোগ নির্নয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় এক যূগ ধরে বন্ধ থাকা নিয়োগ দ্রুত সম্পন্ন করেন। আপনার মতামত দিন : SHARES মেডিকেল টেকনোলজি বিষয়: