করোনাভাইরাস: কারফিউতে স্তব্ধ ভারত

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারতে শুরু হওয়া ১৪ ঘণ্টার কারফিউতে স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা দেশ। সকাল ৭টায় শুরু হওয়া এ কারফিউ চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। রোববার (২২ মার্চ) বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়, দিল্লির প্রাণকেন্দ্র সদাব্যস্ত কনট প্লেসে রবিবার সকাল থেকে কোনও মানুষের দেখা নেই। সারি সারি দোকানের শাটার নামানো, মেট্রো স্টেশনের কলাপসিবল গেটে বিশাল তালা ঝুলছে। পালিকা বাজার, সরোজিনী নগর মার্কেট বা লাজপত নগরও জনশূন্য। যে পার্কিং লটে জায়গা পেতে রোজ নাভিশ্বাস ওঠে, সেটা প্রায় খালি। রিং রোডে পর্যন্ত গাড়ির দেখা নেই, চাইলে সেখানে ক্রিকেট ব্যাট-বল নিয়ে নেমে পড়া যাবে। এতটাই ফাঁকা দিল্লির প্রধান আর্টারিয়াল রোড।  শুধু রাজধানীতে নয়, গোটা ভারতের নানা প্রান্তে মোটামুটি একই ধরনের ছবি।

ভারতীয়দের আজ রোববার সকাল সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত টানা ১৪ ঘণ্টা কঠোরভাবে বাড়ির ভেতরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। অত্যাবশ্যকীয় সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠার ছাড়া কেউ যেন এই কারফিউয়ের মধ্যে বের না হয়, সে বিষয়ে কড়া নির্দেশ রয়েছে। এছাড়ও রবিবার ঠিক বিকেল পাঁচটায় নিজেদের বাড়ির দরজা বা জানালার সামনে এসে কিংবা বারান্দায় দাড়িয়ে সজোরে হাততালি দিয়ে, শঙ্খনাদ করে, দরকারে থালা-বাসন বাজিয়ে সম্মিলিতভাবে কলতান সৃষ্টিরও অনুরোধ করেছেন তিনি।

আজ কারফিউ শুরুর কিছু আগে মোদি টুইট করেছেন, ‘আর কিছুক্ষণ পরই জনতা কারফিউ শুরু হবে। আসুন সবাই এতে শরিক হই। কোভিড-১৯-এর ভয়াবহ সংক্রমণ ঠেকাতে আমাদের সবার শক্তি একত্র করি। আজ যে পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি, তা আমাদের ভবিষ্যতে সহায়তা করবে। ঘরের ভেতর থাকুন, সুস্থ থাকুন।’

শাসক দল বিজেপি ও তার সমর্থকরা যথারীতি প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছেন। ওদিকে বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী আবার টুইটে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘দেশের ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলো এবং দিনমজুররা প্রবল সঙ্কটে আছেন। শুধু তালি বাজালে তাদের কোনও লাভ হবে না!’ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচক হিসেব পরিচিত অভিনেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট শাবানা আজমি কারফিউকে প্রধানমন্ত্রীর মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে অবিহিত করেছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলা জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় এনআরসি ও সিএএ বিরোধী আন্দোলন আজ বন্ধ থাকলেও কারফিউ উপেক্ষা করেই স্বল্প পরিসরে অব্যাহত ছিল শাহীনবাগের আন্দোলন। আন্দোলনকারী অনেককেই বলতে শোনা যায়, ডিটেনশন সেন্টারকে তারা যে কোন রোগের চেয়েও বেশি ভয় পায়, তাই এনআরসি ও সিএএ বাদ না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রতিবাদ চলবে।

প্রসঙ্গত, ভারতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৩৩২ জন শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে অন্তত ৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ২৭ জন।

আপনার মতামত দিন :