মমেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ‘শাস্তিমূলক’ সেই নোটিশ বাতিল Emon Emon Chowdhury প্রকাশিত: ১:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২০ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সেই শাস্তিমূলক নোটিশটি বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (৬ এপ্রিল) সকালে মমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. চিত্ত রঞ্জন দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তারা কয়েকেজন গতকাল হাসপাতালে এসেছিলো। তারা বলছে দেশে চলমান লকডাউনের গনপরিবহন না থাকায় তারা আসতে পারেনি। তাদের অনেকের বাড়ি খুলনা, অনেকের ঝিনাইদহ, চাঁদপুরে। তাদের জন্য তো আসলেই এ মুহূর্তে আসাটা জটিল হয়ে গেছে। এ ব্যপারে পরিচালক মহোদয়ের সাথেও আমার কথা হয়েছে। তিনিও তাদের জয়েন করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তারা একসাথে আসলেই জয়েন করতে পারবে। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এই দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে ইন্টার্নশিপে যোগ না দেওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেলের ৫২তম ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ প্রশিক্ষণের সুযোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই সংক্রান্ত একটি চিঠি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ‘অতীব জরুরি’ সিল দিয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের) দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হতে ২০১৯ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত পেশাগত ফাইনাল এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের (এম-৫২ ব্যাচ) ২০২০ সালের ১৪ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ তারিখের মধ্যে যোগদান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তবে ২ এপ্রিল পর্যন্ত এই ব্যাচের কেউ যোগদানপত্র দাখিল করেনি বা যোগদান করেননি। এত সংখ্যক ইন্টার্ন চিকিৎসক একসঙ্গে যোগদান না করার ফলে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় মারাত্মকভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। তাই এম-৫২ ব্যাচের যেকোনো শিক্ষার্থীরা যেন কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার সুযোগ না পান, এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বক্তব্য: ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা সেবায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি ছিল। ৫৫-তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী করোনা সাসপেক্ট হওয়ায় গত ১৮ মার্চ এক নোটিসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগ করতে বলা হয়। অধ্যক্ষের নির্দেশে সবাই হল ত্যাগ করে। এ ব্যাপারে পরিচালক স্যার অবগত ছিলেন না। এছাড়া বিএমডিসির কিছু কাগজপত্র তারা তখনও হাতে পাননি। এসব কারণে সবাই বাড়ি চলে যায় এবং এর মধ্যে সারাদেশ লকডাউন হয়ে যায়। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাদের পক্ষে স্বাস্থ্য সেবায় যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, ‘আজকে আমরা স্থানীয় কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিচালক স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। এ সময় হল ছাড়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ স্যারের নির্দেশনার বিষয়ে বলেছি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিএমএ ও স্বাচীপ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ৭ এপ্রিল স্যার অফিসে আসবেন। তখন একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলে আশা করছি। বিষয়টি এখন মীমাংসিত বলা চলে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই ব্যাচের আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, গত ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে ক্যাম্পাসগুলে বন্ধ হয়ে যায়। তখনও ইন্টার্ন হোস্টেলের অ্যাটলমেন্ট হয়নি। অন্যদিকে ১৮ তারিখের মধ্যে হোস্টেল খালি করে দেওয়ার নোটিস দেন অধ্যক্ষ স্যার। ফলে সকল মেয়েরা বাড়ি চলে যায়। এর মধ্যে লকডাউন হয়ে যায়। গত ২৬ তারিখে সবাইকে যোগদানের নোটিস করা হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসে না থাকায় এ ব্যাপারে ইন্টার্নরা কিছুই জানতে পারেনি। এ কারণে তারা আসতে পারেনি। লকডাউন উঠে গেলেই তারা যোগদান করবে। আপনার মতামত দিন : SHARES ক্যাম্পাস সংবাদ বিষয়: