ক্লাস-পরীক্ষা চললেও সহসা খুলছে না বিএসএমএমইউর লাইব্রেরি

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০২০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। দেশের চিকিৎসাবিদ্যায় উচ্চশিক্ষার প্রধান ভরসাস্থল এ প্রতিষ্ঠানে সমান্তরালভাবে চলে শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসা।

করোনাভাইরাস মহামারীতেও প্রতিষ্ঠানটি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে একাডেমিক কার্যক্রম কিছুদিন অনলাইন ভিত্তিক চললেও এখন তা আগের মতোই স্বাভাবিক। ফলে ক্লাস, পরীক্ষাসহ প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম আগের রূপে ফিরেছে। শুধু ব্যতিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের চিত্র।

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জীবনের সাথে মিশে থাকে লাইব্রেরি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বন্ধ রয়েছে বিএসএমএমইউ’র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। করোনা সংক্রমণ রোধে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম যেহেতু স্বাভাবিকভাবে চলছে তাই গ্রন্থাগার খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূ্ত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৮ তারিখে বিএসএমএমইউ রেসিডেন্সি কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া এমডি এমএস ১ম, ২য় ও ফাইনাল পরীক্ষাসহ এফসিপিএস পরীক্ষা, রেসিডেন্সি ফেজ ‘এ’ ও ফেজ ‘বি’র ফাইনাল পরীক্ষা এবং নন-রেসিডেন্সি পরীক্ষাসহ ছয়টি ফ্যাকাল্টির পরীক্ষাও খুবই কাছে।

যা বলছেন শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্লাস, পরীক্ষা যেহেতু আগের মতোই চলছে সেহেতু লাইব্রেরি খুলে দিলে প্রস্তুতি নিতে তাদের জন্য সুবিধা হবে। এছাড়া লাইব্রেরিতে বিএসএমএমইউ’র শিক্ষার্থী ছাড়া বহিরাগতরা যেন প্রবেশ না করতে পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএমএমইউ’র একজন রেসিডেন্ট চিকিৎসক বলেন,‘ইনডোর, আউটডোরসহ ওয়ার্ডগুলোও এখন খোলা রয়েছে। ফলে এসব জায়গাগুলোতে আমরা রোগীর সংস্পর্শে যাচ্ছি।  সামনে ‘ফেজ’ পরীক্ষা রয়েছে, ওয়ার্ডে পড়ার কোনও সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার আগে অন্তত লাইব্রেরি খুলে দিলে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া যেতো।’

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে এমনিতেই আমাদের পড়ালেখায় অনেক গ্যাপ হয়ে গেছে। ফলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এ মুহূর্তে লাইব্রেরি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া আক্রান্তের ভয় তো সব জায়গাতেই আছে। আতঙ্কের মধ্যে থেকেই তো আমরা কাজ করছি। সেই হিসাবে লাইব্রেরির পরিবেশ তো অনেক ভালো এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার সুযোগও রয়েছে।’

বিএসএমএমইউ’র আরও একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেডিভয়েসকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। কিন্তু বহিরাগত মেডিকেল শিক্ষার্থীরা বেশি আসে। যা আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে।

ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাইরে কাউকে লাইব্রেরি কার্ড না দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সবার আগে লাইব্রেরি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বিএসএমএমইউর যত রেসিডেন্ট রয়েছেন তাদের জন্য দূরত্ব বজায়  রেখে লাইব্রেরিতে পড়া সম্ভব। যা কর্তৃপক্ষ চাইলেই করতে পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয় এবং লাইব্রেরির কার্ড প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বাইরে কাউকে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছেন তারা।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য লাইব্রেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের সুবিধার্থে এটি করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের জন্যও যদি খুলে দেওয়া হয়, পরে আক্রান্ত হলে তখন তারা আমাকে এসে ধরবে। এছাড়া খুলে দিলে সংক্রমণ সামলানো যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ’র লাইব্রেরিতে পড়ার জন্য বহিরাগত অনেক মেডিকেল গ্রাজুয়েটরা আসে। ফলে বহিরাগতদের সাথে আমার শিক্ষার্থীদেরকে একসঙ্গে করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার কোনও অর্থ হয় না।  সুতরাং এ মুহূর্তে লাইব্রেরি খোলা হচ্ছে না। তবে সংক্রমণ কমে গেলে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

লাইব্রেরিতে বহিরাগতদের প্রবেশের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, এই বিষয়টিসহ লাইব্রেরির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং সামনে আরও আলোচনা হবে। তবে এখন আগের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।’

আপনার মতামত দিন :