কুয়েত-বাংলাদেশে মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সাময়িক বরখাস্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। অবিলম্বে তাদের শাস্তিমূলক এ আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে রোববার (১২ এপ্রিল) একটি বিবৃতি দিয়েছেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম।

বিবৃতিতে ড্যাবের এই দুই নেতা বলেন, মনে রাখতে হবে চিকিৎসকেরও পরিবার আছে। একজন চিকিৎসকও স্বামী বা স্ত্রী, কারো পিতা বা মাতা। তাদেরও রয়েছে পিতা মাতা, আত্নীয়-পরিজন। সবকিছু উপেক্ষা করেই এই দুঃসময়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। সুতরাং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এইসব বিবেচনায় নেয়া সমীচীন ছিল।

ড্যাবের এই দুই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষার জন্য সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে যারা নিরলসভাবে কাজ করছেন, তাদের ব্যাপারে পূর্বের মতোই তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিলে যে তা ভুল হয়, এই দুঃসময়ের সৈনিকদের প্রতি অবিচার করা হয়, তাদের এই আত্নত্যাগে প্রতি একধরনের অসম্মান প্রদর্শন করা হয়, পরোক্ষভাবে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা হয় তা আবারও প্রমাণিত হলো।

তারা বলেন, চিকিৎসকদেরকে আত্নপক্ষ সমর্থনের নিয়মানুগ সময় না দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করা চাকরি বিধি অনুযায়ী কতটা যৌক্তিক এই প্রশ্ন চলে আসে। কেননা রবখাস্তকৃত চিকিৎসকদের তালিকাটি ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ছয়জন চিকিৎসকের মধ্যে চারজনই যোগদান পরবর্তী তারিখ খেকে বেশ কয়েকদিন অনুপস্থিত এবং দু’জন করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যাপারে অনীহা দেখিয়েছেন। অথচ শেষোক্ত একজন মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছেন যে তিনি করোনা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে পরবর্তী ১৪ দিনের বাধ্যগত আইসোলেশনে কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত হোটেলে অবস্থান করছেন।

তারা আরও বলেন, যারা যোগদানের পর থেকে অনুপস্থিত তাদের নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সময়মতো জবাবদিহি না করে এখন করোনা চিকিৎসার সঙ্গে এটিকে জড়িয়ে সামাজিকভাবে চিকিৎসকদেরকে হেয় করা এবং দুঃসময়ে তাদেরকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে কর্তৃপক্ষ এক ধরনের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। অথচ এই মুহূর্তে করোনা প্রতিরোধ, করোনাক্রান্ত এবং অন্যান্য রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই প্রদানসহ তাদেরকে কাজে উৎসাহ প্রদান করা সবার কর্তব্য।

ড্যাবের নেতৃদ্বয় বলেন, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা মাঠপর্যায়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। এমতাবস্থায় ড্যাব অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নেয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আদেশটি বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছে। এই মুহুর্তে বিভেদ না বাড়িয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এই মহা সমস্যা উত্তরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।