টোলারবাগ-বাসাবোয় কমেছে করোনা সংক্রমণের গতি : আইইডিসিআর

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২০

রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ ও বাসাবো এলাকায় করোনা সংক্রমণের গতি কিছুটা কমে এসেছে। গত ৮ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সংক্রমণের হালনাগাদ তথ্যে উঠে এসেছে এ কথা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, টোলারবাগ ও বাসাবো দুই জায়গায়ই আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৯। গুচ্ছ সংক্রমণের কারণে গত একমাস ধরে টোলারবাগে লকডডাউন চলছে। আর বাসাবো লকডাউন হয়ে আছে ৭ এপ্রিল থেকে। এলাকাবাসীর উদ্যোগেই চলছে এ লকডাউন। তবে টোলারবাগ স্বস্তিদায়ক মনে হলেও বাসাবো এলাকার বাসিন্দারা নিজেদেরকে এখনো ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।

গত ২১ মার্চ টোলারবাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকা আলিয়ার সাবেক অধ্যক্ষ মারা যান। এর দুদিনের মাথায় মারা যান তাঁরই এক প্রতিবেশী। এর পর থেকে এলাকাবাসী টোলারবাগে কঠোরভাবে লকডাউন জারি করে।

তারা জানিয়েছেন, এই এলাকায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১৯ জন। দুজন মারা গেছেন। অন্যরা ভালো আছেন। দশ আগে ৪২ জনের নমুনা নিয়ে গেছে আইইডিসিআর। একজনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন।

যে কৌশলে অবস্থার উন্নতি 

টোলারবাগে ঢোকা ও বেরোনোর পথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টোলারবাগের এই এলাকার রাস্তা ধরে যাঁরা অন্য রাস্তায় উঠতেন, তাঁদের এখন একটু ঘুরে যেতে হচ্ছে। বন্ধ আছে বিভিন্ন মোড়ে আড্ডা ও দোকানপাট। স্থানীয় মুদি দোকানগুলো দিনে চার ঘণ্টার বেশি খোলা থাকছে না। সিটি করপোরেশন একদিন পর পর এসে জীবাণুনাশক ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। তবে এলাকায় নিম্ন আয়ের শতাধিক মানুষে খাবারের সংকটে ভুগছে। শুরুর দিকে জেলা প্রশাসন থেকে কিছু ত্রাণ দেওয়া হলেও এখন আর দেওয়া হচ্ছে না। এলাকা লকডাউন হওয়ায় কাজেও বেরোতে পারছেন না তাঁরা।

টোলারবাগের মতো বাসাবোতেও আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কিছুটা কম। তবে এখানকার সব মানুষ এখনো যথেষ্ট সচেতন নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাসাবোয় করোনাভাইরাসের সূত্রপাত হয়েছিল বিদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তির মাধ্যমে। পরে তাঁর পরিবারেরই ছয়জন সংক্রমিত হন। পরে বাঁশ ফেলে বাসাবো এলাকায় যান ও জনচলাচল নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষ। তবে কয়েকটি কারণে এখনো ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে বাসাবোর বাসিন্দরা।

মাদকের আখড়া বলে পরিচিত ওহাব কলোনিতে আগের চেয়ে জনসমাগম কম হলেও এখনো আড্ডা হচ্ছে। স্থানীয় বউ বাজারের জনসমাগম ঠেকানো যাচ্ছে না। পাশেই মাঠ, পার্ক বা খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে এই বাজার স্থানান্তর করা যায় বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রাজধানীর অন্যান্য এলাকার চিত্র

সারা দেশে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৭৭২ জন। তাঁদের মধ্যে শুধু ঢাকা শহরে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৭০ জন। রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছেন রাজারবাগে। এই সংখ্যা ৭০ জন। এরপরই রয়েছে মোহাম্মদপুর। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ জন।

এছাড়া লালবাগে ৩৯ জন, যাত্রাবাড়িতে ৩৭, বংশালে ৩৪, চকবাজারে ৩২, ওয়ারিতে ৩০, ধানমন্ডিতে ২৬, উত্তরায় ২৫, তেজগাঁয় ২৪, গেন্ডারিয়ায় ২২, মিরপুর-১৪ নম্বরে ২১, শাঁখারিবাজারে ২০ জন, টোলারবাগ, বাসাবো ও গুলশানে ১৯ জন করে, শাহবাগ, মিরপুর-১১ ও আজিমপুরে ১৬ জন করে, মিরপুর-১ নম্বরে ১৩, মিরপুর-১২ নম্বরে ১২, বাবুবাজার ও গ্রীনরোডে ১১ জন করে রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। এই সংখ্যা ৫০৮ জন। তাছাড়া গাজীপুরে ২৬৯, কিশোরগঞ্জে ১৪৬ ও নরসিংদীতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৬ জন।

আপনার মতামত দিন :