যুক্তরাষ্ট্রের করোনা ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ পরীক্ষায় ব্যর্থ!

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৭:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ করোনা আক্রান্ত শরীরে প্রয়োগের পর ব্যর্থ হয়েছে। যদিও প্রথম দিকে আক্রান্ত রোগীরা দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন বলে দাবি করে আসছিলো যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রথম ট্রায়ালে তা ব্যর্থ হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

বিবিসি বলছে, এমনই একটি সংবাদ ভুলবশত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়ে যায়। যেখানে দেখা যায় যে, করোনা আক্রান্তদের এই ওষুধ সেবন করানোর পর ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৩৭ জন রোগীর উপরে ট্রায়াল করে দেখা হয়েছে এই ওষুধ। ১৫৮ জনকে রেমডেসিভির সেবন করিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল, বাকি ৭৯ জনকে ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। ফলাফলে দেখা গেছে, রেমডেসিভির যারা সেবন করেছেন তাদের শারীরিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। আবার কয়েকজনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গিলেড সায়েন্স জানিয়েছিলো, ৫৫০০ রোগীর উপরে এই ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। সেই ট্রায়ালের তথ্য গোপন রেখেছিলো প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে এই ওষুধের ব্যর্থ ফলাফলের কথা সামনে চলে আসে।

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এখন পর্যন্ত কোনও অনুমোদিত ওষুধ নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কার্যকরী ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথও বেশ কয়েকটি ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে। এরই একটি হলো রেমডেসিভির ওষুধ। গিলেড সায়েন্সেস-এর তৈরি এ ওষুধটি ইবোলার বিরুদ্ধে পরীক্ষা করা হলেও এতে সফলতা এসেছিলো খুবই কম। তবে বিভিন্ন পশুর শরীরে চালানো বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে কোভিড-১৯, সার্স ও মার্সসহ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় এ ওষুধ কার্যকরী। ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, রেমডেসিভির ওষুধটির করোনায় কাজ করার সম্ভাবনা আছে।

২০১০ সালে এই অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ তৈরি করে গিলেড সায়েন্সস। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছিল, রেমডেসিভির  নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ।  সার্স ও মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কিছুটা হলেও কাজে এসেছিল এই ড্রাগ। চারজন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপর এই ড্রাগের প্রভাব কার্যকরী হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছিল সংস্থার পক্ষ থেকে। যদিও তখনই এই ওষুধ ব্যবহারে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারেনি গিলেড সায়েন্সেস। পরে, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে একটি গবেষণার রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, রেমডেসিভির ভাইরাসের বৃদ্ধি ও বিস্তার আটকাতে পারে। ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা সঙ্কটাপন্ন রোগীদের উপরেও কাজ করতে পারে এই ড্রাগ।

আপনার মতামত দিন :