করোনা : হতাশায় চিকিৎসকসহ দুই স্বাস্থ্যকর্মীর আত্মহত্যা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা রোগীদের চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত চিকিৎসকসহ দুজন স্বাস্থ্যকর্মী আত্মহত্যা করেছেন। দুজন হলেন নিউইয়র্ক প্রেসপেটেরিয়ান হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন লরনা ব্রিন (৫৯) ও এস্টোরিয়া এলাকায় ইমার্জেন্সি সার্ভিসে কর্মরত প্যারামেডিক জন মনডেলো (২৩)।

অনেকেই বলছেন, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর এ তাণ্ডব অনেকেই সামাল দিতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা।

জানা গেছে, করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজেই প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডা. লোর্না এম ব্রিন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি আবারো করোনা রোগীদের চিকিৎসার কাজ শুরু করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি তাকে আবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পূর্বে কোন মানসিক রোগ না থাকলেও ইদানিং ডা. লোর্না এম ব্রিন বিমর্ষ থাকতেন বলে জানিয়েছ তার পরিবার।

লরনা ব্রিনের বাবা চিকিৎসক ফিলিপ ব্রিন বলেন, লরনা ব্রিন এত মৃত্যু নিতে পারছিল না। করোনা যোদ্ধার সামনের সারির তালিকায় যেন লরনা ব্রিনকে স্মরণ করা হয়।

হাসপাতালে কর্মরত অন্যান্য চিকিৎসকদের দাবি, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে নগরীর হাসপাতালগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মানুষ জরুরি বিভাগে আসছে, আর মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে রোগী রাখার জায়গা ছিল না, পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ছিল না। চিকিৎসার নগরী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের চিকিৎসকেরাই অসহায় হয়ে পড়েন। শুরুতে তাঁদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার অভাব ছিল, ছিল না আগাম কোনো প্রস্তুতি। অনেক চিকিৎসক অজান্তেই আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকের মৃত্যুও হয়েছে।

এর আগে ২৪ এপ্রিল নগরীর এস্টোরিয়া এলাকায় ইমার্জেন্সি সার্ভিসে কর্মরত প্যারামেডিক জন মনডেলো আত্মহত্যা করেছেন। তিনি নিজের পুলিশ কর্মকর্তা বাবার পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন। গত দুই মাসে নগরীর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ব্রঙ্কসের ক্লারমন্টে ইমার্জেন্সি স্টেশনে কাজ করতেন জন। পুলিশ বলেছে, এত মৃত্যুর দৃশ্য একসঙ্গে দেখে মানসিকভাবে নিজেকে সামাল দিতে পারেননি দুজন।

চীনে উৎপত্তি হলেও আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ১০ হাজার ৫০৭ জন। মারা গেছেন ৫৬ হাজার ৮০৩ জন।

আপনার মতামত দিন :