করোনায় কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের নির্দেশ

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপে মেডিকেল কলেজসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এর মধ্যেই বকেয়াসহ বেতন ও হোস্টেল ফি পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে রাজধানীর আনোয়ান খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নাম্বারে পাঠানো এক ক্ষুদেবার্তায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সুপ্রিয় ছাত্র/ ছাত্রী, আপনাকে মে মাসের টিউশন/ হোস্টেল ফি এবং আপনার বকেয়া টিউশন/ হোস্টেল ফি আগামী ৫ই মে’র মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিঃ এর ধানমন্ডি শাখায় হিসাব নং 4003-12400000294 (Swift Code: SJBL BD DH DHN)বা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখা অথবা অন্য কোন ব্যাংক থেকে অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে আপনার নাম, ব্যাচ ও রোল উল্লেখ সহ জরিমানা ছাড়া জমা প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনায় সারাদেশে লকডাউনের ফলে এখন তো আমাদের অনেকেরই আগের মতো আয় নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় আমাদের পরিবারগুলোও অনেকটা ক্রাইসিস সময় পার করছে। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই হল ছেড়ে বাড়িতে চলে গেছে। এ অবস্থায় হোস্টেল ফি-টিউশন ফিসহ গতমাসের বকেয়া টাকাও প্রদানের জন্য নোটিশ দিয়েছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। চাইলে গতমাসের ফিগুলো গতমাসেই নিয়ে নিতে পারতো, কিন্তু ওইমাসে না নিয়ে এ মাসে দুটা এক সাথে দেয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেকটা কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

টিউশন/ হোস্টেল ফির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ থেকে কোন চাপ আসছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ এখনো কোন প্রকার চাপ দেয়নি। তবে যথাসময়ে দিত না পারলে আসবে। এছাড়াও আমাদের মেডিকেলে যথাসময়ে টিউশন/ হোস্টেল ফি দিতে না পারলে জরিমানার ব্যাবস্থা আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তো গত দুইমাস যাবৎ হোস্টেলে থাকছি না। সামনে আরো কয়দিন হোস্টেলের বাইরে থাকতে হয়, সেটাও বলা যাচ্ছে না। এদিকে মেডিকেল কলেজও বন্ধ, তাহলে হোস্টেলে না থেকেও, ক্লাস না করেও এভাবে বাড়িতে থেকে হোস্টেল ফিসহ টিউশন ফি কিভাবে দিবো? এমনটা নয়তো যে প্রাইভেটে পড়ি বলে আমাদের সবাই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। আমাদের সাথে অনেক সাধারণ পারিবারের ছেলেরাও পড়াশোনা করেন। সরকারসহ সবাই যখন বর্তমান পরিস্থিতিতে নমনীয়, আমাদের মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষেরও উচিত এ বিষয়টা শিথিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি নমনীয় হওয়া।’

এ বিষয়ে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, করোনায় লকডাউনের কারণে যদি কারো টিউশন ফি এবং হোস্টেল ফি দিতে অসুবিধা হয়, তাহলে এটা কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান এই ব্যাপারে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিবে। এটা শুধু এই সময়ে নয়, সারাবছরই অনেক শিক্ষার্থী সময়মতো তাদের ফিগুলো পরিশোধ করতে পারে না। আমাদের সবমিলিয়ে ৭’শয়ের উপরে শিক্ষার্থী। সবার সামর্থ্য সমান নয় বা অনেকেরই নানা সমস্যা থাকতে পারে। তাই এটা বিবেচনায় নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললেই কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়ে দেন। দেশের চলমান লকডাউনেও যদি কেউ সময়মতো দিতে না পারে, তাহলে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে অবশ্যেই কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে। যথাসময়ে কেউ দিতে না পারলে পরবর্তীতে তার উপর কোন জরিমানা আরোপ না।

এ নিয়ে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. এখলাসুর রহমানকে একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

আপনার মতামত দিন :