করোনার হটস্পটের পথে রংপুর Selim Selim Reja Sobuj প্রকাশিত: ১:১২ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২০ বিভাগীয় নগরী রংপুরে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। করোনা সংক্রমণে বিভাগের আট জেলার মধ্যে রংপুরেই সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে। উত্তরের এই জেলার মানুষের উদাসীনতা আর অকার্যকর লকডাউনে করোনায় করুণ পরিণতির আশঙ্কা সচেতন মহলে। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি মে মাসের গেল আট দিনে রংপুর জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮২ জনের। আর মোটে এখন এই জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২০ এ দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে মাত্র সাতজন। পরিস্থিতি আর আক্রান্তের সংখ্যায় রংপুর যেন করোনার হটস্পটের দিকে যাচ্ছে। গত ৮ এপ্রিল রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় মুন্সিগঞ্জ ফেরত এক কিশোরের শরীরে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ এপ্রিল বদরগঞ্জে আক্রান্ত হন আরও দুইজন। এরপর থেকেই দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে আক্রান্তদের তালিকা। প্রতিদিন দু’ একজন করে আক্রান্ত হলেও এখন সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ২৩ থেকে ২৭ এপ্রিল নগরীর সোনালী ব্যাংকের বাজার শাখায় কর্মরত ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হলে পুরো জেলায় বাড়ে আতঙ্ক। প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে পুলিশ, চিকিৎসক, নার্স ও ব্যাংকে কর্মরত ব্যক্তিদের তালিকা। গত ২ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত রংপুর মেডিকেল কলেজ ও দিনাজপুর এম এ রহিম মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার নমুনা। এতে পুরো বিভাগে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩০১ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত রোগী রংপুরে। এর পরই নীলফামারী, সেখানে ৪০ জন। এছাড়াও দিনাজপুরে ৩৮, কুড়িগ্রামে ৩৩ জন, গাইবান্ধা ২৪, ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩, লালমনিরহাটে ১৩ এবং পঞ্চগড় জেলায় ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও অকার্যকর হতে দেখা যাচ্ছে লকডাউন পরিস্থিতি। রংপুর নগরীর পাশাপাশি জেলা উপজেলার বাজারগুলোতেও বাড়তে শুরু করেছে জনসমাগম। বাহিরে বের হওয়া লোকজনের উদাসীনতায় স্বরূপে ফিরছে রংপুর। যেন কোভিড-১৯ এখানকার মানুষের কাছে ধরাশয়ী। আর এতে করে বাড়ছে ঝুঁকি, বাড়ছে করোনা রোগীও। অন্যদিকে, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ধীরে ধীরে প্রশাসনের শিথিলতা আর এক শ্রেণির মানুষের উদাসীনতায় শঙ্কিত জেলার সচেতন বাসিন্দারা। রংপুর করোনা প্রতিরোধ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেন্জু জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভালো কোন সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতারও অভাব রয়েছে। সামাজিক সংগঠন যেগুলো কাজ করছে তাদের সঙ্গেও কারো কোন সমন্বয় নেই। এভাবে সমন্বয়হীনতা আর অকার্যকর লকডাউনে ক্রমশই করোনা পরিণতি ভয়াবহ পরিস্থিতি দিকে যাচ্ছে। তবে, রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলছেন, করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে প্রশাসন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল সীমিত করেছি। এছাড়াও কাঁচাবাজারগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করার চেষ্টা করছি। যাতে এক এলাকার লোক অন্য এলাকায় এসে বাজার করার দরকার না পড়ে। প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রচারণার পাশাপাশি বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। আপনার মতামত দিন : SHARES জাতীয় বিষয়: