একদিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু, রোগী শনাক্তে নতুন রেকর্ড

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২০

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ভাইরাসটি হানা দেয়ার পর দেশে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬৯-এ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ১৬২ জন। এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭ হাজার ৮২২ জনে।

বুধবার (১৩ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি ৪১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও সাত হাজার ৮৬২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ৯০০টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৪৪ হাজার ৫৩৮টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ১৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৯ জন, এটিও সর্বোচ্চ রেকর্ড। মৃত ১৯ জনের ১২ জন পুরুষ ও সাত জন নারী। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৯-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২১৪ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন হাজার ৩৬১ জন।

গত মঙ্গলবার (১২ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছয় হাজার ৭৭৩টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৯৬৯ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় তো মৃত্যু ও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তো বেড়েছেই, দুই দিক থেকেই নতুন রেকর্ড হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

দেশে গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বুধবারের আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল ১৫ জনের। সেটা ১৭ এপ্রিলের বুলেটিনে জানানো হয়। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল এক হাজার ৩৪ জনের। ওই তথ্য জানানো হয় গত ১১ মের বুলেটিনে।

বুধবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ১৫০ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন তিন হাজার ৪৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৬ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৩৩২ জন।

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৬৩৪টি। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ৯০০টি ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে পাঁচ হাজার ৭৩৪টি। এছাড়া আইসিইউ শয্যা আছে ৩৩৫টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি। আইসিইউ শয্যা ও ডায়ালাইসিস ইউনিট বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বুলেটিনে ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৫৫৮ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার ৬৪২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৬২ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৩৬১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪৫ হাজার ২২১জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে।

বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন করোনাভাইরাসের কবলে গোটা বিশ্বই। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪৩ লাখ। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৯৩ হাজারেরও বেশি। তবে ১৬ লাখেরও বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

আপনার মতামত দিন :