করোনায় শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলে এফসিপিএস পরীক্ষা নয়: বিসিপিএস

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০২০

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলে এফসিপিএসসহ কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) অনারারি সচিব অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

তিনি বলেন, কম সময়ের প্রস্তুতিতে এ পরীক্ষার আয়োজন করা কঠিন। তাই পরিবেশ ফিরলে নির্বিঘ্নে যেন পরীক্ষা নেওয়া যায়—এমন পরিকল্পনা থেকেই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তবে পরিস্থিতির অস্বাভাবিকতায় পরীক্ষা না নেওয়া গেলে কোনো পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ফি বাতিল হবে না। যখনই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, সে ওই রেজিস্ট্রেশন দিয়েই অংশ নিতে পারবে।

পরীক্ষা জুলাই মাসেই হবে কিনা—জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বিকেলে বলেন, ‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সব কিছু অনিশ্চয়তায়। আমরা কি করবো বা না করবো তাও ঠিক বলতে পারছি না। এই পরীক্ষাগুলো এমন অনুপম পরীক্ষা—আগে থেকে আয়োজন না করলে নেওয়া দুরুহ হয়ে পড়বে। ধরুন, কোনো কারণে জুলাইয়ের পরীক্ষা নেওয়ার অবস্থা হলো, প্রস্তুতি না থাকলে তখন কিন্তু তা নিতে পারবো না। সে লক্ষ্যেই এফসিপিএস পরীক্ষা সংক্রান্ত এ বিজ্ঞাপন। এছাড়া বিষয়টি এমন না যে, এইবার রেজিস্ট্রেশন করে পরীক্ষা দিতে না পারলে তার টাকা নষ্ট হয়ে যাবে। যখনই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, চাইলে সে ওই রেজিস্ট্রেশন দিয়েই অংশ নিতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য সব জায়গাতেই সীমিত পরিসরে লকডাউন খুলে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা যদি কাজ না করি তাহলে পরীক্ষা নিতে পারবো না। রয়েল কলেজের আদলে পরীক্ষা হলেও আমাদের কিন্তু ওদের মতো তিনটি সেশনে পরীক্ষা হয় না। আমাদের হয় ১ জানুয়ারি ও ১ জুলাই—এই দুই সেশনে। সুতরাং আমাদের হয় তো পরীক্ষা পরিবর্তন করে ১ জানুয়ারিতে নিয়ে যেতে হবে কিংবা পরের ১ জুলাইয়ে। এছাড়া ১ জানুয়ারিতে পরীক্ষা নেওয়া যাবে তারও তো কোনো নিশ্চয়তা নাই। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। আমরা যেহেতু বেঁচে আছি, চেষ্টা করছি; যদি নেওয়া যায় নেবো, না হয় না। কলেজের কাউন্সিলে এটা বলে দেওয়া হয়েছে, এ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো ঠিকই, কিন্তু বিষয়টি এমন না যে সবাইকে বিপদে ফেলে পরীক্ষা নেবো। যানবাহন বন্ধ, …তো এ অবস্থায় বাহির থেকে ছেলেরা কিভাবে আসবে?’

অনেক ডাক্তার করোনার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত আছেন। এ পরিস্থিতিতে তাদের জন্য পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে কেউ যদি বলে পড়াশোনা করা সম্ভব না। এগুলো একেবারেই সত্য কথা। আমরা আশা করছি, এই দুর্বিসহ দিনগুলো হয় তো থাকবে না। হয় তো আমরা সামনে (পরীক্ষা) নিতে পারবো। আর যদি একান্ত নাই পারি তাহলে তো কিছুই করার নাই। বন্ধ করে দিতে হবে।’

করোনার এই সময়ে অনেক ডাক্তার বেকার। এ অবস্থায় পরীক্ষার ফি ১১ হাজার থেকে কমানো যায় কিনা—এমন প্রশ্নে বিসিপিএস অনারারি সচিব ব্যক্ত করলেন ইতিবাচক মনোভাব।

অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘কলেজটি চলে মূলত কাউন্সিলরদের দিয়ে, যারা ফেলোদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। আমিও একজন কাউন্সিলর। আমার একটি দায়বদ্ধতা আছে। আমি চাইলেই সব কিছু করতে পারবো না। আপনাদের প্রস্তাবটি অবশ্যই বিবেচনাযোগ্য। এটি আমি কাউন্সিলে উপস্থাপন করবো যে এবারের পরীক্ষার ফি কমানো যায় কিনা? এটা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। সরকার থেকে আমাদের জন্য বরাদ্দ একেবারেই কম। সারা বছরে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা দেওয়া হয়। এবার যারা পার্ট-১ পাস করেছে তাদেরকে সরকার বিএসএমএমইউর মতো ভাতা দিচ্ছে। কলেজের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় এ পরীক্ষা কেন্দ্র করেই।’

অনেকের বিএমডিসি রেজিস্টেশনের মেয়াদ শেষ। সেক্ষেত্রে তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে আমি বিএমডিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর কলেজের কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছেন যে, কোনো চিকিৎসকের যদি বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকে, যিনি ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেছেন। ওই ইন্টার্নশিপের সার্টিফিকেট দিয়ে হবে। এটা না থাকলে টেস্টিমোনিয়াল আছে যা কলেজ থেকে দেওয়া হয়েছিল—ওটা দিয়েও পারবে। অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত মার্কশিট দিয়েও হবে। যে কোনো একটি কাগজ হলেই হবে। আমাদের দরকার প্রমাণ।’

রেজিস্ট্রেশনের লক্ষ্যে ব্যাংকে যাওয়া অনিরাপদ হওয়ায় বিকাশ ও রকেটের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে বিসিপিএস অনারারি সচিব বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিসিপিএসের পক্ষে একক হিসাব খোলার সুযোগ নেই। সরকারি নিয়ম মতো আমাদের যে ওয়েবসাইট আছে সেটাতে আমাদের ট্যাগ করতে হবে। এটি সম্পন্ন হয়ে গেলে ব্যাংকে না গিয়েও তারা ঘরে বসে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে।’

রেজিস্ট্রেশনে আগ্রহীদের বিপদে ফেলবেন না জানিয়ে বিসিপিএসের গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তে বিভ্রান্ত না হতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

এর আগে বুধবার (১৩ মে) বিসিপিএসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জুলাই ২০২০ সেশনে অনুষ্ঠেয় এফসিপিএস ১ম পর্ব পরীক্ষার্থীরা এমবিবিএসের সাময়িক সনদ এবং বিএমডিসির সাময়িক রেজিস্ট্রেশনসহ সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠনের ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র আপলোড করে অনলাইনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন।

আপনার মতামত দিন :