ওরাও আমার দেশের জনগণ, ওদের খাবারের কথা আমাদেরই চিন্তা করতে হবে-সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম

Arup Arup

Sarker

প্রকাশিত: ৯:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, অরুপ সরকার

করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী অনেক দেশের জনগণ অসহায় হয়ে পড়ছে। তার মধ্যে আমাদের মত দেশের সাধারণ জনগণ হয়ে পড়ছে কর্মহীন। সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন কিছু শ্রেণির মানুষ রয়েছে তারা সবসময়ই অসহায়। বর্তমানে তারা আরো বেশি অসহায় হয়ে পড়ছে। তারা এখন খেয়ে না খেয়ে জীবন পাড় করছে। কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে টোকাই, রাস্তার পাশে পলি টানিয়ে বসবাসরত মানুষজন,  রাস্তার মোড়ে মোড়ে খাবারের জন্য অপেক্ষমান মানুষজন। ওদের এখন টাকা থেকে সরাসরি খাবার বেশি প্রয়োজন। দুই একটি সংঘটন ব্যতিত সবাই নগদ টাকা বা বাজার করে দিচ্ছেন কিন্তু এই অসহায় শ্রেণির মানুষগুলোর খাবারের প্রয়োজন বিষয়টি অনেকের চোখে পড়ছে না। এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত সচেতনতামূলক সামাজিক সংঘটন ‘এসো সচেতন হই সোসাইটি (এসই)’ । করোনা পরিস্থিতিতে  নিজেরাই খাবার তৈরি করে এই অসহায় শ্রেণির মানুষগুলোর মাঝে খাবার বিতরণ করছেন। তারই ধরাবাহিকতায় গত মে ১৯, ২০২০ মঙ্গলবার ৪৫০ প্যাকেট তেহারী রাস্তায় যারা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে বৌদ্ধ মন্দির, খিলগাঁও ফ্লাইওভার এর নিচে, খিলগাঁও বস্তি, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেইট, মৌচাক, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর এলাকায় বিতরণ করেন।

“ওরাও আমার দেশেরই জনগণ, ওদের খাবারের কথা আমাদেরই চিন্তা করতে হবে।” ঐসব অসহায় মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণের সময় এই কথাটি বলেন এসই এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সমাজর্কমী মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, এইসব মানুষগুলো সহায় সম্বলহীন। ওরা এখন কারো না কারো খাবারের অপেক্ষায় থাকে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ ওদের জন্য খাবার দেয়া প্রয়োজন। এটা ব্যক্তিগত উদ্যোগেও হতে পারে। এসই ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তখন থকেই তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে আসছে। দুটি প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ করে আসছে। করোনা ভাইরাস উপলক্ষে ইতমিধ্যে অনেক কাজ করছে এসই। তিনি আরো জানান, যেহেতু ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে যাচ্ছেন, অর্থের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আজকের খাবার বিতরণে অর্থায়নের ক্ষেত্রে এসই ছাড়াও ইঞ্জিনয়িার তারকি শাহরয়িার এসই এর র্কাযক্রম দেখে মুগ্ধ হয়ে এগিয়ে আসেন। তিনি তাঁর কয়েকজন প্রবাসী বন্ধুদের সাথে এসই এর কার্যক্রম সম্বন্ধে আলোচনা করেন। যারপ্রেক্ষিতে তারা এসই এর কার্যক্রমে এগিয়ে আসনে। এসই করোনা ভাইরাস সমস্যায় মোকাবেলায় বেশ কিছু সচেতনতামূলক কাজ করার মধ্যে অসহায় পরিবারকে বাজার করে দেওয়া ছাড়াও বিশেষ করে অসহায় মানুষদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে বেশি।

এসই এর প্রতিষ্ঠাতা সমাজকর্মী মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, করোনা পরস্থিতি একটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা বলে মনে হচ্ছে। তাই সমাজের প্রত্যকেরেই এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কেউ কেউ এইসব অসহায় মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে পারেন। খাবার বিতরণের সময় তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একবার খাবার দিলেই শেষ নয়। যারা অসহায় তাদের তিনবার খাবার প্রয়োজন। সুতরাং সরকারের র্দীঘ মেয়াদী একটি সুনির্দিষ্ট পরকিল্পনা গ্রহণ করতে হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ঐসব মানুষদেরকে একটি নির্ধারিত জায়গায় রেখে খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য সরকাররে প্রতি আহ্বান জানান সমাজর্কমী মোঃ মাজহারুল ইসলাম। তিনি আরো একটি মতামত প্রকাশ করে বলেন, ঐসব অসহায়দের সরকার র্কতৃক এমন ব্যবস্থা করতে হবে যারা নর্দিষ্টি কয়কেটি রাস্তায় বা জায়গায় বসে থাক।তাতে যারা খাবার দিবেন তারা সহজইে খাবার বতিরণ করতে পারবনে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভাগ করে খাবার দিতে পারবেন। তাতে সব অসহায় মানুষগুলো খাবার পাবে।

উল্লখ্যে, এসই ধারাক্রমে কমলাপুর টোকাইদের মাঝে, শিশুপার্ক, মৎসভবন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের পাশে আইডিয়াল জোন, মতিঝিল মডেল স্কুলের পাশে যারা পলি টানিয়ে ঘর বেধে বসবাস করছে তাদেরকে, কাকরাইল, বিজয়নগর, জোনাকী হলের পাশে, ফকিরাপুল এবং আরামবাগ ধারাক্রমে ঐসব এলাকায়  ‘এসো সচতেন হই সোসাইটি (এসিই)’ সরাসরি খাবার বিতরণ করে আসছে।

সমাজকর্মী  মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, এসই ঈদের দিন অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করবে এবং বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠি হিজড়াদের মাঝে সংঘঠনের সামর্থ অনুযায়ী ঈদ উপলক্ষ্যে ঈদ সামগ্রী কিনার জন্য নগদ কিছু অর্থ বিতরণ করবে। তিনি ‘এসই’ এর কার্যক্রম সঠিকভাবে যেন চালিয়ে যেতে পারেন তার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

অসহায়দের খাবারের ক্ষেত্রে শুধু ‘এসো সচেতন হই সোসাইটি (এসই)’ এগিয়ে আসলেই হবে না এসই এর মতো অনেকেরই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, এই অসহায় মানুষগুলো রাষ্ট্রেরই জনগণ।

আপনার মতামত দিন :