করোনা পরিস্থিতিতে হচ্ছে না ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ৮, ২০২০

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হচ্ছে না দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা। কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায় কোনোভাবেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরই এই নিয়ে পরিকল্পনা করবেন তারা। তবে এজন্য তাদের একটি যৌক্তিক সময় দরকার পড়বে। এদিকে ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা বিকল্প উপায়ে নেওয়ার দাবি দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ  বলেন, ‘এটা নিয়ে কাজ অব্যাহত আছে। ডিনের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে সীমিত আকারে কাজ শুরু হয়েছে। তবে পরীক্ষা আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা নাই। এখনতো খুবই খারাপ অবস্থা। বিষয় হলো, আমরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে নিয়ে আসবো, দুই-আড়াইশ’ ছেলেকে বসাবো কি করে? নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে তো বসাতে পারবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা কখন-কিভাবে নেবো, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত না। এ নিয়ে বিস্তর চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী নিয়ে বেশ কিছু ঝামেলা আছে। এজন্য কয় দিন পরে এই চাপটা নেবো।’

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঘোষিত পরীক্ষাগুলো স্থগিত হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে ঢামেক অধ্যক্ষ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জুলাইয়ের ১ তারিখে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এসব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিসিপিএসের প্রশ্ন তৈরি করে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। অর্থাৎ যেসব পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। সুতরাং প্রফেশনাল পরীক্ষা নিয়ে নিয়ে পরে চিন্তা করবো।’

অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ফার্স্ট ও সেকেন্ড প্রফেশনালের শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত আছে। পাশাপাশি ফাইনাল প্রফের সাপ্লিমেন্টারি যারা আছে তারাও প্রস্তুত।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর  বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে, আগে সারাদেশের কলেজ খুলতে হবে। এর পর আমরা পরিকল্পনা করতে পারবো। আমাদের পরীক্ষা সংক্রান্ত কমিটি নিয়ে মিটিং করতে হবে। মিটিংয়ের অনুমতি ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায় এটা সম্ভব না। শিক্ষার্থীদেরকে ওয়ার্ডে পাঠাতে হবে, রোগী দেখতে হবে। খুলে দেওয়ার পরও আমাদের যৌক্তিক একটি সময় লাগবে, যাতে প্রস্তুতি নেওয়া যায়। কলেজ খোলার পরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে কবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর কলেজ খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপর।’

বিকল্প উপায়ে নেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

এদিকে ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা বিকল্প উপায়ে নেওয়ার দাবি দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। গত মে মাসে স্থগিত হয়ে যাওয়া এবং জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় পুরনো প্রফেশনাল পরীক্ষারা বলেছেন, পরীক্ষা হয়ে গেলে এ সংকটময় মুহূর্তে সীমিত পরিসরে হলেও স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হতে পারবেন তারা।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ফাইনাল প্রফ পরীক্ষার্থী মো. পিয়াস  বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের ব্যাচের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী আছে। এ পরীক্ষাটা বিকল্প উপায়ে নিলে স্বাস্থ্য সেবায় প্রায় দুই হাজার চিকিৎসক যুক্ত হতে পারবে, যারা করোনা রোগীদের সেবা দিতে পারবে।’

বগুড়া মেডিকেলের ২০১৪-১৫ ব্যাচের এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘প্রতি ব্যাচে ২০/৩০ জন করে শিক্ষার্থী আছে। তাদের লিখিত পরীক্ষা তো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই নেওয়া সম্ভব। ভাইভা পরীক্ষাটা চাইলে ভার্চুয়ালি নেওয়া যায়। অথবা যথাযথভাবে পিপিই পরেও দিতে পারবো। বুঝলাম, ফাইনাল প্রফে রোগীদের সংস্পর্শে আসতে হবে, যা পরীক্ষা নেওয়ার বেলায় একটি বাধা। এখন আমরা যদি ইন্টার্ন হতাম তাহলে তো রোগীদের সংস্পর্শে আসতেই হতো। এছাড়া স্যাররাও তো রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন।’

আপনার মতামত দিন :