আজ ১৫ই জুন আন্তর্জাতিক প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২০

আজ ১৫ই জুন আন্তর্জাতিক প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস।
প্রতি বছর ১৫ইজুন বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস পালন করা হয় । এই দিবস পালনের লক্ষ্য হল, বয়স্কদের উপরে নির্যাতন এবং তাদের যন্ত্রনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। প্রবীণদের উপর অত্যাচার অবহেলা সম্পর্কে সব বয়সী মানুষকে সচেতন করে তোলাই এই দিবসের লক্ষ্য।

উন্নয়নশীল এবং উন্নত সব দেশেই প্রবীণদের নির্যাতন কম বেশী হয়ে থাকে, তবে উল্লেখ্য যে প্রবীণ নির্যাতনের বিষয় গুলো খুব কম সামনে আসে
প্রবীণদের উপর বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন হয় সেটা হতে পারে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক অথবা অর্থনৈতিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ৬ জন বয়স্ক ব্যক্তির মধ্যে ১ জন প্রবীণ নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন। সেই অনুসারে প্রায় ১৪১ মিলিয়ন প্রবীণ সারা বিশ্বে নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন। এবং তারা আরো বলেন এর পরিমান আরো অনেক বেশী কারন ম্যাক্সিমাম প্রবীণ নির্যাতন নথিভুক্ত হয় না।

বর্তমানে সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারী সিচুয়েশনের কারনে প্রবীণদের প্রতি নিগ্রহ অবহেলা এবং নির্যাতনের সংখ্যা আরো অনেক গুনে বেড়ে যাচ্ছে। এই সিচুয়েশনে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে তাদের কে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না, বরং আমরা জানি এই সময়ে প্রবীণ জনগোষ্ঠী সবচ্যে বেশী সমস্যায় ভুগছেন।

আমাদের সমাজের দিকে তাকালে দেখা যাবে এক সময় আমরা প্রবীণবান্ধব সমাজ ছিলো কিন্তু দিনে দিনে এই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, আমাদের সমাজেও প্রবীণদের প্রতি নির্যাতন বেড়ে যাচ্ছে , সন্তান এবং আত্বীয়দের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত তারা শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন, আহত নিহতের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে, বাসা থেকে বের করে দেওয়া, আঘাত করা, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া, গাল মন্ধ করা, খেতে না দেওয়া, নিজেরা ভালো খাবার খেয়ে তাদের ভালো খাবার না দেওয়া সহ অসংখ্য ধরনের নির্যাতন হচ্ছে বাংলাদেশে। এছাড়াও আমাদের প্রবীণরা অর্থনৈতিক নিগ্রহের স্বীকার হচ্ছেন তাদের জমানো টাকা সম্পদ ছেলে মেয়েরা নিয়ে যাচ্ছে, নিয়ে আর তাদের খোজ নিচ্ছেন না, তারা অসহায় এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

প্রবীণ স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে স্বামিকে এক জায়গায় স্ত্রী কে আরেক জায়গায় রাখা হচ্ছে যা তাদের মানসিক সমস্যা তৈরি করছে কারন প্রবীণ বয়সে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের উপর পুর্ন নির্ভরশীল থাকে তাই তাদের আলাদা করা রাখাও একটা নির্যাতন।

প্রতিনিয়ত প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে, সেই সাথে নির্যাতন ও বাড়ছে আমরা চাই একটা প্রবীনবান্ধব সমাজ, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৫ ভাগের ১ ভাগ থাকবে প্রবীণ তাই সব বয়সী মানুষদের সচেতন করা না গেলে প্রবীণ নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়।

তাই আসুন যারা প্রবীণ আছেন আপনারা আপনাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হউন, মনে রাখবেন আপনার প্রতি আপনার সন্তানের দেখাশোনা ভরন পোষন সহানুভূতি নয় দায়িত্ব ও কর্তব্য এই দায়িত্ব প্রতিটি ধর্ন দিয়েছে এবং সংবিধান আইন করে তা দিয়েছে। এবং নবীনদের কে বলবো আজ আপনি নবীন আগামীকাল আপনি প্রবীণ তাই আপনার জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রবীণ নির্যাতন বন্ধ করুন তাদের ভালবাসুন।

ডাঃ মোঃ নেছার উদ্দিন
প্রবীণ বিশেষজ্ঞ
সঞ্চালক
প্রবীণ কথন

আপনার মতামত দিন :