করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও থেমে নেই প্রাণহানি

Selim Selim

Reja Sobuj

প্রকাশিত: ৬:০০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
TOPSHOT – Medical staff members carry a patient into the Jinyintan hospital, where patients infected by a mysterious SARS-like virus are being treated, in Wuhan in China’s central Hubei province on January 18, 2020. – The true scale of the outbreak of a mysterious SARS-like virus in China is likely far bigger than officially reported, scientists have warned, as countries ramp up measures to prevent the disease from spreading. (Photo by STR / AFP) / China OUT

চীনের হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আরও ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে প্রদেশটিতে এ ভাইরাসে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৯ জনে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের সবশেষ এ তথ্য বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে, নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবহিকভাবে কমে আসছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্যবিভাগ। সিএনএন।

সংবাদ মাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হুবেই স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসের চীনে মোট দুই হাজার ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর বিশ্বব্যাপী সে সংখ্যা ২ হাজার ১২০ জন। অর্থাৎ চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২৬২ জন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে হংকং ও ইরানে দুইজন করে চারজন এবং তাইওয়ান, জাপান, ফিলিপাইন, ফ্রান্সে একজন করে মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটিকে বিশ্ববাসীর জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক ইথিওপিয়ার টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেছেন, ভাইরাসটি যে কোন সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে।

কোয়ারেন্টিন করা প্রমোদতরী নিয়ে বিতর্ক বাড়ছেই : জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টিন করে রাখা জাহাজ বা প্রমোদতরীটি নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিতর্কের মধ্যেই জাহাজটির শত শত যাত্রী, যারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হননি, তারা বাড়ি ফিরছেন। তবে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জাপানের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক বাড়ছে। এর মধ্যে যে জাহাজটিতে শত শত মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, সেই ডায়মন্ড প্রিন্সেস পরিদর্শন করেছেন জাপানের একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, তিনি বলেছেন জাহাজের অবস্থা ভীষণ বিশৃঙ্খল। ডায়মন্ড প্রিন্সেসে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করার পরও জাহাজটির যাত্রীরা ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা জাহাজটির নেয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কেনটারো আইওয়াটা, যিনি জাপানের কোবি ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিভাগের একজন অধ্যাপক, তিনি জাহাজটি পরিদর্শন করে বলছেন, জাহাজে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, সংক্রমণ ঠেকাতে তা ছিল একেবারেই অপর্যাপ্ত। জাহাজটি ঘুরে দেখার পর তিনি ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যাতে বলা হয়, তিনি দেখে এসেছেন কর্তৃপক্ষের নেয়া ব্যবস্থায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের, যারা সংক্রমিত হননি তাদের থেকে পুরোপুরি আলাদা করতে সক্ষম হয়নি।

ভিডিওতে তিনি আরো বলেছেন, আফ্রিকায় যখন তিনি ইবোলার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কাজ করেছিলেন, তখন তিনি অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করেছিলেন। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থার পরও জাহাজটির যাত্রীরা ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে শুরু করেন বলে মন্তব্য করেন প্রফেসর কেনটারো আইওয়াটা।

এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাস ঠেকাতে নেয়া ব্যবস্থা হয়তো পর্যাপ্ত ছিল না। সেই সঙ্গে ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীরাও বর্ণনা করেছেন, জাহাজে কোয়ারেন্টিন থাকাকালে কী কঠিন পরিস্থিতি পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের।

বাড়ি ফেরা দুই যাত্রীর মৃত্যু : জাপানের প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের করোনাভাইরাস আক্রান্ত দুই যাত্রী মারা গেছেন। দীর্ঘ দু’সপ্তাহ ধরে জাহাজে অবরুদ্ধ থাকার পর বুধবার আরও অনেকের সঙ্গে ছাড়া পেয়েছিলেন ওই দু’জন। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই তাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। বৃহস্পতিবার জাপানের সরকারি সংবাদ মাধ্যম এনএইচকে’র বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ‘দ্য স্ট্রেইটস টাইমস’। জাপানের ইয়োকোহামায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়া ওই প্রমোদতরী থেকে বুধবার যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয়। এরপরই ওই দু’জনের মারা যাওয়ার খবর সামনে এলো।

আপনার মতামত দিন :