স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে বেক্সিমকো ও স্কয়ার, দিচ্ছে পিপিই-ওষুধ-কিট

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৯:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২০

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ওষুধ ও টেস্ট কিট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কর্পোরেট খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

বেক্সিমকো গ্রুপ দেবে ১৫ কোটি টাকার পিপিই, ওষুধ ও টেস্ট কিট ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দিয়েছে ১০ হাজার পিপিই।

এ উপলক্ষে শনিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান (এমপি) বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে প্রথম ধাপের উপকরণ তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো, আইসিডিডিআর,বি’র সংক্রমণশীল রোগ বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক অধ্যাপক অ্যালেন রস, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি ডা. বর্দন জং রানা, সিডিসি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান, আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমান বলেন, যেকোনো জাতীয় দুর্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে বেক্সিমকো গ্রুপ সবসময় বদ্ধপরিকর। কভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এই মুহূর্তে একটি অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আর স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রয়োজনে সাড়া দিতে পেরে তারা গর্বিত। দায়িত্বশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা এই সংকট মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তা প্রদান করা অব্যাহত রাখবে।

বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান (এমপি) বলেন, এই বৈশ্বিক সংকটের সময় বাংলাদেশের এখন জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য ওষুধ, রোগ শনাক্তকরণের কিট ও সম্মুখভাগে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় পিপিই। ডাক্তার, নার্স ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং হাসপাতালের কর্মকাণ্ড যতদূর সম্ভব স্বাভাবিক রাখতে পিপিই সরবরাহ অব্যাহত রাখবে বেক্সিমকো।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দুই ধাপে পিপিই বিতরণ করবে বেক্সিমকো ফার্মা। প্রথম দফায় দুই পরীক্ষা কেন্দ্র অর্থাৎ আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর,বি এবং কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকার নির্ধারিত হাসপাতাল অর্থাৎ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কমলাপুর বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতাল, নয়াবাজার মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতাল, কামরাঙ্গিচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, জিঞ্জিরা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় এসব পিপিই সরবরাহ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে সারা দেশজুড়ে ১৫০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে এই পিপিই সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মা।

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে ডাক্তার এবং নার্সদের পাশে দাঁড়ালো স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মে. জে. মো. মাহবুবুর রহমানের হাতে ১০ হাজার পিপিই’র প্রথম চালান তুলে দেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আনিকা চৌধুরী।

এ সময় ওষুধ প্রশাসন ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘১০ হাজার পিপিই আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে স্কয়ার। তাদের এ কার্যক্রমকে আমি স্বাধুবাদ জানাই। শিল্পপতিসহ আমাদের সর্বস্তরের সবাই যদি এগিয়ে আসি তাহলে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সহজ হবে।’

সরবরাহ করা এসব সুরক্ষা সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সব ধরণের ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট এড়াতে নিজেদের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা জানিয়েছে ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানটি।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক আনিকা চৌধুরী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর যেন কোনো সংকট তৈরি না হয় সেজন্য নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রি পরিবেশে উৎপাদন ও সরবরাহসহ আমাদের সব কার্যক্রম চালু রয়েছে। আমরা দেশের পাশে দাঁড়াতে চাই, চিকিৎসক-নার্সদের পাশে দাঁড়াতে চাই। এ দুঃসময়ে স্কয়ার সবার পাশে থাকতে চায়।’

এ বিষয়ে স্কয়ারের কোম্পানি সচিব খন্দকার হাবিবুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পিপিই’র একটি চালান হস্তান্তর করা হয়েছে। পিপিইগুলো দেশেই তৈরি করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন :