জিপিএ ৪ পেয়েছে ঘা’তকের হাতে খু’ন হওয়া বড়লেখার জাকারিয়া

Emon Emon

Chowdhury

প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২০

এফ.টি. উজ্জ্বল আহমেদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি :

বড়লেখা উপজেলার দক্ষিনভাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ ইউপির আরেঙ্গাবাদ গ্রামের সালাহ উদ্দিনের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার ফলপ্রার্থী জাকারিয়া হোসেন (১৮) গত ২১ মে বৃহস্পতিবার নির্মমভাবে খুন হয় । জাকারিয়ার বাবা সালাহ উদ্দিন তার বাড়ির পাশে টং দোকানে পান, সিগারেট ও কাঁচামালের ব্যবসা করেন। ২১ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ছে’লে এসএসসি পরীক্ষার ফলপ্রার্থী জাকারিয়া হোসেন (১৮) দোকানদারী করছিল ৷ প্রতিবেশি তোতা মিয়া বাড়ি থেকে টাকা এনে দিচ্ছেন বলে ডারবি সিগারেটসহ ৮৫ টাকার মালামাল ক্রয় করেন। বিকেল পর্যন্ত অ’পেক্ষা করেও তোতা মিয়া পাওনা টাকা পরিশোধ করেননি। রাত ৮টার দিকে জাকারিয়া হোসেন দোকানের পাওনা টাকা চাইতে তোতা মিয়ার বাড়িতে যায়। তিনি টাকা নেই বলে তাকে বিদায় করার চেষ্টা করেন। কিন্ত জাকারিয়া হোসেন টাকা না দিলে তার বাবা তাকে বকাঝকা করবেন জানিয়ে বারবার অনুনয় বিনয় করে। এসময় তোতা মিয়ার ছে’লে প্রবাস ফেরত আজিম উদ্দিন (৩৫) তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সে জাকারিয়া হোসেনকে উপুর্যুপরি চু’রিকাঘাত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে জুড়ী উপজে’লা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃ’ত ঘোষণা করেন।

মাত্র ৮৫ টাকার জন্য খু’ন হয়ে গেলো দুরন্ত এক কি’শোর।আর অকালেই ঝরে গেলো একটি তা’জা প্রা’ণ এবং দেশের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র, যে নক্ষত্রটি এই দেশকে ভবিষ্যতে দিতে পারত অনেক কিছুই।যার সামনে ছিলো একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। কিন্তু সেই ঘা’তক তার ভবিষ্যতকে ২১ মে রাত ৮ টায় থামিয়ে দিলো।ঘা’তক আজিম উদ্দিন সুধু জাকারিয়াকে হ’ত্যা করেনি সে হ’ত্যা করেছে জাতির এক সম্ভাবনাকে।হাজারো স্বপ্ন বুকে নিয়ে জাকারিয়া এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছিলো।লেখাপড়া করে বাবা-মা’র স্বপ্ন পূরন করবে।কিন্তু তার সে স্বপ্ন পূরনের আগেই সেই ঘা’তক নিভিয়ে দিলো তার জীবন প্রদীপ।

জাকারিয়ার স্বপ্ন ছিলো উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে একজন ডাক্তার হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করবে। সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। ঘা’তকের হাতে শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ পার না হতে অকালেই ঝরে গেলো তার প্রা’ণ। সেই সাথে মা-বাবার বুক খালি করে ঘা’তক কেড়ে নিলো তাদের অনাগত স্বপ্নকে।

ছোটবেলা থেকেই জাকারিয়া অ’ত্যন্ত মেধাবী হিসেবে বেড়ে উঠছিলো। পড়াশুনার দিক থেকে যেরকম তুখোড় মননের অধিকারী ছিলো, পরহেজগারিতা ও সচ্চরিত্রের দিক থেকেও অ’ত্যন্ত সচেতন ও সৎ ছিলো। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো সে।কেউ জাকারিয়াকে কখনো উচ্চ স্বরে কারো সাথে কথা বলতেও দেখেনি।পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে জাকারিয়া ছিলো সবার বড় ও আদরের। তাদের গ্রামে জাকারিয়ার পড়াশুনা ও চরিত্র নিয়ে সকলে প্রশংসায় ভাসতেন। দক্ষিণভাগ মেরিট কেয়ার একাডেমি থেকে পিএসসিতে জিপিএ ৫ ও দক্ষিনভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি তে জিপিএ ৪ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হয়েছিলো জাকারিয়া।এরপর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নবম শ্রেনীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয় সে।বুকের মধ্যে সেই লালিত স্বপ্ন নিয়ে জাকারিয়া এগুচ্ছিলো।চলতি বছরের সে এসএসসি পরিক্ষা দেয়।খুবই ভালো পরিক্ষা হয়।একটা ভালো ফলাফলের অ’পেক্ষায় দিনগুনছিলো সে।কিন্তু ফল পাওয়ার আগেই তার প্রা’ণ কেড়ে নিলো ঘা’তক।

আপনার মতামত দিন :