আম্মু দরজা খোলো আমি তোমাকে দেখবো, আমি ফায়জা!

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২০

-রাকিব হাসান অভি ঃ

এভাবেই কভিড আক্রান্ত মাকে দেখার আকুতি জানায় তিন বছরের মেয়ে ফায়জা।
নাসরিন রহমান,একজন চিকিৎসা কর্মী,
উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন কুমিল্লা জেলার রায়কোট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে।বেশ কয়েক বছর যাবৎ ইউনিয়ন পর্যায়ে শুনামের সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি।করোনার এই মহামারী পরিস্থিতিতে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে গত ২৩ মে,তিনি কভিড এ আক্রান্ত হন।দীর্ঘ ২৫ দিন অসুস্থ থাকার পর গত ১৭ জুন ফলাফল নেগেটিভ আসে তার।

শারিরীকভাবে জ্বর,গলা ব্যথা দিয়ে শুরু হলেও মানষিকভাবে শুরু হয় মনের চাপা তীব্র কষ্ট,পজেটিভ আসার সাথে সাথে নিজেকে বাসায় আলাদা করে ফেলেন এবং যেহেতু নিজের যত্ন নিজেকেই নিতে হবে সেজন্য ভেঙ্গে না পরে আরও মনোবল বৃদ্ধি করলেন।বাসায় তিন বছরের মেয়ে ফায়জার প্রতিটা মূহুর্ত হৃদয় বিদারক।দরজার সামনে এসে চোখের পানি দিয়ে নিজেকে ভিজিয়ে ফেলতো,একটু মায়ের কাছে যাওয়ার আকুতি।ভিতরে তখন মায়ের চোখ ভিজে যাচ্ছিল সন্তানের আর্তনাদ দেখে।মাঝে মাঝে বাবার মোবাইল থেকে ভিডিও কলে মায়ের সাথে কথা বলতো ফায়জা। কিন্তু সবকিছুই ফায়জার কাছে ছিলো আতঙ্কের।যে ফায়জা ঘুমাতে পারতো না,খেতে পারতো না,মাকে ছাড়া অথচ আজ তাকে এই কঠিন পরিস্থিতি মেনে নিতে হচ্ছে।

সুস্থ হয়ে ফায়জাকে আদর করছেন মা।

এর মধ্যে আবারও এক দুঃসংবাদ পেতে হয় নাসরিন রহমানকে। তার দশ বছর বয়সী ছেলে নাইমুর রহমানের করোনা পজেটিভ ফলাফল আসে।
শারিরীকভাবে সুস্থ হলেও মানুষিকভাবে বোঝাই যাচ্ছে কি হচ্ছে তার মধ্যে।ছেলেকে নিজ বাড়িতে রেখেই চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এই মানবসেবক।
পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবারও নিজেকে নিয়োজিত করবেন মানবসেবায়।

এই অবদান আমরা কখনো ভূলবো না। আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ হে মানবসেবক।
মেডিনিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

আপনার মতামত দিন :