গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবায় ১০ হাজার উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ প্রয়োজন M. Mijanur M. Mijanur Rahman প্রকাশিত: ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২০ বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল বিএমডিসি নিবন্ধিত ডিপ্লোমা চিকিৎসক-সাব এ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারগণ (এসএসিএমও) ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত গাজীপুর কাপাসিয়ার একজন ইন্টার্ন ডিপ্লোমা চিকিৎসক করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া সহ এ পর্যন্ত ৩১ জন ডিপ্লোমা চিকিৎসক-উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার কর্মস্থলে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও তারা তাদের কর্মস্থলে অকুতোভয় বীর স্বাস্থ্য সৈনিক হিসেবে করোনা যুদ্ধে রোগীদের সাধ্য মতো চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম যেদিন আমাদের দেশে নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয় তখন থেকেই শহরের শ্রমজীবী মানুষ করোনার ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পেতে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ীতে চলে গেছেন। আমরা জানি এদেশের প্রায় ৮০ ভাগ লোক গ্রামে বসবাস করেন। গ্রামের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র গুলো প্রাইমারী লেভেলের। উপজেলা পর্যন্ত প্রাইমারী লেভেলের স্বাস্থ্য সেবা পরিচালিত হয়। গ্রামে গ্রামে লক ডাউন বলবৎ থাকায় এখন আর গ্রামের রোগী জেলা শহরে সেকেন্ডারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে যেতে পারছেন না। এমতাবস্থায় গ্রামের সিংহভাগ রোগী ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছেন। প্রাইমারী লেভেলে স্বাস্থ্য সেবার প্রথম হাতিয়ার ডিপ্লোমা চিকিৎসকগণ। তারপরও গত ৬ বছর ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের কোন নিয়োগ নেই। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে প্রায় ৩ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক-সাব এ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) পদ শূন্য রয়েছে। বিগত ৬ বছরে মোট কর্মরত পদ থেকে অবসরগ্রহণ করেছেন আরো প্রায় ১ হাজার এসএসিএমও। দীর্ঘদিন এ পদে নিয়োগ নেই তাই বেকার রয়েছেন মেডিকেল সায়েন্সের মতো জটিল বিষয়ে প্রশিক্ষিত হাজার হাজার ডিপ্লোমাধারী জনবল। অনেক মেডিকেল ডিপ্লোমাধারী দীর্ঘদিন চাকরির আশায় থেকে থেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে নিজের ডিপ্লোমা চিকিৎসকতা পেশার কথা ভুলে যেয়ে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করছেন। বৈশ্বিক এই স্বাস্থ্য দুর্যোগকালীন সময়ে গ্রামীণ জনপদের মেজরিটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দেয়া ও নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ মোকাবেলার কথা বিবেচনা করে অতিদ্রুত ১০ হাজার উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেয়া অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় গ্রামীণ জনপদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ১০ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক ‘সাব এ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার এসএসিএমও’ পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপ-হাসপাতাল, প্রাইমারী লেভেলের বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান সহ জেনারেল ও সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন। এছাড়াও প্রায় ১২ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দেশি বিদেশি এনজিও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে কর্মরত আছেন। বর্তমানে নতুন পাশ করা ১৫ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক বেকার ও কর্মহীন রয়েছেন। এমতাবস্থায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে উপরোক্ত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। লেখক : ডা. এম. মিজানুর রহমান (জনস্বাস্থ্যবিদ) ডিপ্লোমা চিকিৎসক পেশাজীবী নেতা। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট জনস্বাস্থ্যবিদ পেশাজীবী নেতা। আইন শাস্ত্রের শিক্ষার্থী ও সুলেখক। আপনার মতামত দিন : SHARES অপরাধ ও অসংগতি বিষয়: