দেশে দুই করোনা রোগীর শরীরে প্লাজমা থেরাপি Emon Emon Chowdhury প্রকাশিত: ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০২০ পরীক্ষামূলকভাবে করোনায় আক্রান্ত দুই রোগীর শরীরে প্লাজমা প্রয়োগ করা হয়েছে। রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা মুমূর্ষু দুই রোগীর শরীরে এ পরীক্ষা চালায়। এরই মধ্যে একজন মুমূর্ষু রোগীর অবস্থা উন্নতির দিকে, আর অন্যজনের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পুলিশ হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা দুজন মুমূর্ষু রোগীর শরীরে গত শনিবার রাতে প্লাজমা প্রয়োগ করা হয়, যাঁদের বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। অনেকটা শেষ চেষ্টা হিসেবে প্লাজমা প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে একজন গতকাল মারা যান। অন্যজনের অবস্থার আর অবনতি হয়নি। তিনি ভেন্টিলেটরে ছিলেন। এখন তাঁর ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে রোগীর এই উন্নতি শুধু প্লাজমার কারণে না অন্য কিছুতে, তা এখনো বলা যাবে না বলে তিনি জানান। ওই চিকিৎসক বলেন, মাত্র দুজন রোগীর শরীরে প্লাজমা প্রয়োগ করে এর সফলতা বলা ঠিক হবে না। কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ রোগীর শরীরে প্রয়োগের পর এর কার্যকারিতা পরিষ্কার হবে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, বাংলাদেশে তাঁরাই প্রথম প্লাজমা প্রয়োগ করছেন না। এর আগে আরও একটি বেসরকারি হাসপাতাল প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করেছে। তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেলে বার্ন ইউনিটের ট্রান্সমিশন মেডিসিন বিভাগের সহায়তায় এই প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পুলিশ হাসপাতাল নিজেও প্লাজমা সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের প্রধান ডিআইজি হাসান উল হায়দার গণমাধ্যমকে বলেন, এই হাসপাতাল এখন থেকে মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করবে। এ জন্য দরকারি সরঞ্জাম ও অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চলমান পরীক্ষামূলক কোভিড-১৯ চিকিৎসার তালিকা দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ৩৩টি সুনির্দিষ্ট ধরনের এবং ‘অন্যান্য’ ওষুধ ব্যবহার করে চিকিৎসার কথা আছে। সেই তালিকায় প্লাজমা, স্টেম সেলসহ অনেক পরীক্ষামূলক থেরাপির কথাও আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই প্লাজমা থেরাপির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ১৮ এপ্রিল একটি কারিগরি উপকমিটি গঠন করে। কমিটি পরীক্ষামূলক গবেষণার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নৈতিক অনুমতি দেয়। রক্তের জলীয় অংশকে বলে প্লাজমা। তিন প্রকারের কণিকা বাদ দিলে রক্তের বাকি অংশ রক্তরস। কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরের রক্তের প্রায় ৫৫ শতাংশই হলো রক্তরস। ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা ব্যক্তির শরীরে এক ধরনের প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়, যাকে বলে অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি হয়ে যায় নতুন রোগীর প্রতিষেধক। সেরে ওঠা রোগীর অ্যান্টিবডি নতুন আক্রান্ত রোগীকে সহায়তা করে রোগের সঙ্গে লড়াই করতে। প্লাজমা থেরাপিতে সদ্য সেরে ওঠা রোগীর রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশটি নিয়ে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির শরীরে ঢোকানো হয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠেন। আপনার মতামত দিন : SHARES গবেষণা ও আবিষ্কার বিষয়: