গন-পরিবহণের সিট গুলোই হবে পরবর্তী সংক্রমণের উৎস

প্রকাশিত: ৪:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২০

ডা.রিফাত আল মাজিদ,মেডিকেল জার্নালিস্ট:

সিঙ্গাপুরের তৃতীয় সংক্রমিত ব্যক্তি ছিলেন ৫২ বছর বয়স্ক এক মহিলা– তিনি জানুয়ারির ১৯ তারিখ সিঙ্গাপুরের দ্য লাইফ চার্চ এ্যান্ড মিশন নামের একটি গির্জায় এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি কীভাবে সংক্রমিত হলেন এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আবিষ্কার হয় এক অবাক তত্ত্বের। এরজন্য মহিলাটির সিসি টিভি ফুটেজ গুলো নিয়ে গবেষণা করে সিঙ্গাপুরের রোগের উৎস সন্ধানকারী গোয়েন্দা।

এটি বুঝতে গেলে জানতে হবে সিঙ্গাপুরের ১ম এবং ২য় সংক্রমিত ব্যক্তি সম্পর্কে। সিঙ্গাপুরের ১ম এবং ২য় সংক্রমিত ব্যক্তি ছিলেন চীনের উহান ফেরত এক দম্পতি যারা ঐ গির্জাটিতে ঐ একই দিন সকালে প্রার্থনায় জড়ো হয়েছিলেন। তৃতীয় সংক্রমিত ব্যক্তিটি সেই প্রার্থনায় উপস্থিত ছিলেন না কিন্তু ওই গির্জাতেই সেদিন পরে অনুষ্ঠেয় অন্য একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। গির্জার সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই বেরিয়ে এলো এক অপ্রত্যাশিত তথ্য। চীনা দম্পতি গির্জা থেকে চলে যাবার পর তারা যে চেয়ারে বসেছিলেন, কয়েক ঘন্টা পর সেই চেয়ারেই এসে বসেছিলেন আক্রান্ত মহিলাটি। এখান থেকে ধারণা করা হয় সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোষাক-আষাক বা আসন থেকে এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। এটি আমেরিকান জার্নাল “ভক্স” অনলাইন পত্রিকায় গত এপ্রিল মাসের তিন তারিখে প্রকাশিত হয়। আবার আজকের (২রা জুন) বিবিসি বাংলা অনলাইনেও দেখলাম সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে।

এখন আসি আমাদের দেশের গন-পরিবহণের আসনের কথায়। দুই সিটে একজন এটি খুবই ভাল এবং সামাজিক দূরত্ত্বকে পুরপুরি না হলেও আংশিক নিশ্চিত করবে। কিন্তু একই সিটে সারাদিনে না হলেও অর্ধশত মানুষের অদল-বদল হবে এবং সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্য সকল মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াবে। কারো হাতে ভাইরাস লেগে থাকলে তিনি যদি আরেকজনের হাত ধরেন বা চেয়ার বা দরজার হাতল বা অন্য কিছু স্পর্শ করেন – তার মাধ্যমেও এটা ছড়াতে পারে। আমদের গন-পরিবহণে নিযুক্ত চালক-শ্রমীক ভাইয়েরা কি পারবে প্রতি যাত্রী অদল-বদলে আসন এবং তার চার-পাশকে জীবাণু-নাশকের মাধ্যমে করোনা মুক্ত করতে!!

বাংলাদেশে কোনো একসময়ে এক গনেষণায় দেখেছিলাম সবচেয়ে বেশী নোংরা এবং জীবাণুর আধিক্য পাওয়া গেয়েছিল আমাদের এই গন-পরিবহনের সিটগুলোতে। আমরা অনেক সচেতন হলেও আমাদের পারি-পারশিক পরিবেশ এবং মানুষ গুলো সচেতন না হলে আমরা কখনোই এই মহামারী থেকে বাঁচতে পারবো না। সরকারী লকডাউন শিথীল হলেও করোনা কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি তাই নিজেকে সর্বদা লকডাউনের মত করেই রেখে প্রয়োজনীয় সব কাজগুলো সাড়ুন। আল্লাহ্‌ সহায়।

আপনার মতামত দিন :