ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের ইতিহাস ও ইতিকথা.!

Ashraful Ashraful

Islam Akash

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২০

আশরাফুল ইসলামঃ

-ডিপ্লোমা চিকিৎসক(ডিএমএফ)দের ধ্বংসের জন্য বহু চক্রান্ত করা হচ্ছে যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হল ডা: প্রিফিক্স
নামের পুর্বে ডাঃ লাগানোর কারনে বহু জায়গায় ডিএমএফ চিকিৎসকদের হয়রানির স্বীকার হতে হয় এবং ভুয়া ডাক্তার বলে প্রচারণা করা হয় যা খুবই দুঃখজনক ও কঠিন ষড়যন্ত্রের প্রতিচ্ছবি
এজন্য ডিএমএফদের বিষয়ে প্রশাসন সহ সবার স্পষ্ট ধারণা থাকা অতি প্রয়োজন তাহলে কোন ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের হয়রানির করতে পারবে না

-ডিএমএফ চিকিৎসকদের ইতিহাস :-

১৭০০ খ্রীষ্টাব্দের শুরুর দিকে আজকের এই বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান ছিল ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশ। যা উপমহাদেশ নামে পরিচিত ছিল।এই উপমহাদেশটি তিন টি ভাগে বিভক্ত ছিল।প্রথমত:ভারত অনেক গুলো অঙ্গরাজ্যের সমন্বয়ে।দ্বিতীয়ত:পূর্ব পাকিস্তান(বাংলাদেশ)। তৃতীয়ত: পশ্চিম পাকিস্তান(পাকিস্তান)।অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত এ উপমহাদেশ চিকিৎসা বিদ্যায় তেমন কোন উন্নতি সাধন করতে পারেনি। যার কারনে ব্রিটিশরা চিকিৎসা বিদ্যার উন্নতির জন্য এই উপমহাদেশটির কিছু অঙ্গরাজ্য সমূহে “দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি”তৈরী করে চিকিৎসা বিদ্যায় লাইসেন্সশিয়েট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি(এল এম এফ কোর্স)মেম্বার অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি(এম এম এফ কোর্স)পরিচালনা করেন। যাতে করে এই উপমহাদেশে মধ্যম মানের চিকিৎসক তৈরী করা সহজতর হয়। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত যখন এদেশে চিকিৎসা বিদ্যায় স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী চিকিৎসক অথবা ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কোনটাই ছিল না, তখন ঐ চিকিৎসকেরাই আজকের এই বাংলাদেশের আবহমান জনগোষ্ঠীর মান সম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছেন। অতপর যখন ১৯৪৬ সালে আমাদের দেশে “মেডিকেল কলেজ” স্থাপিত হয় তখন পূর্বের (এল এম এফ কোর্স)ও (এম এম এফ কোর্স) ধারীদের MBBS কোর্স করিয়ে পদন্নোতি দিয়ে মহকুমা হাসপাতাল ও প্রশাসনে নিয়োগ প্রদান করা হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সর্বসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে ১ম, পঞ্চবার্ষিকী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং কোর্স (ম্যাটস) নামে একটি স্কীম প্রনয়ন করেন প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (DMF)কোর্স আন্তর্জাতিক ভাবে অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসেন। যাতে করে এই বাংলাদেশে মধ্যম মানের-ডিপ্লোমা চিকিৎসক তৈরী করা সহজতর হয়।এবং বাংলার সকল শ্রেণীর মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়।
ব্রিটিশদের সৃষ্ট্র মেডিকেল ফ্যাকাল্টি সমূহ যেমন:দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ইষ্ট বেঙ্গল,দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ওয়েষ্ট বেঙ্গল,দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ওয়েষ্ট পাকিস্তান,দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ইষ্ট পাকিস্তান,দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব পাঞ্জাব,ইত্যাদি।
এরই ফলস্রুতিতে ১৯১৪ সালে তৈরী হয় “দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ইষ্ট বেঙ্গল, এবং ১৯৪৭ সালে তা রূপান্তরিত হয়, দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ইষ্ট পাকিস্তান।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব ইষ্ট পাকিস্তান,রূপান্তরিত হয়”দি স্টেট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি অব বাংলাদেশ”
-কিন্তু আজ:-
বতর্মান সময়ে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের ধংসের জন্য এক গভীর চক্রান্তের ফাদ তেরি করা হচ্ছে
ডিপ্লোমা চিকিৎসকগন আজ নির্যাতিত নায্য অধিকার হতে বঞ্ছিত:-

১) ডিএমএফ দের প্যারামেডিক্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল । অথচ প্যারামেডিক্স একটা ১৮ মাসের কোর্স। কিন্তু ডিএমএফ গন ৪ বছরের ডিপ্লোমাধারী
এটি ছিল ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের ধংশের অগ্রিম ষড়যন্ত্র কিন্তু হাইকোর্টের রায় আমাদের পক্ষে থাকায় এ ষড়যন্ত্র সফল হয় নাই।

২) আমাদের উচ্চশিক্ষা নেই অথচ সব ডিপ্লোমাতেই উচ্চশিক্ষা গ্রহনের সুযোগ আছে।

৩) নিয়োগ নেই কমিনিউটি ক্লিনিকে অথচ আমাদের নিয়োগের বদলে ৩মাস প্রশিক্ষিত দের চাকুরি দিয়ে স্বাস্থ্য সেবার মানহানি ঘঠিয়ে আমাদের চাকুরি থেকে হতাশ করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সপ্নের কমিনিউটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দিচ্ছেন নন মেডিকেল পারসন।

৫) সকল ডিপ্লোমা 2nd class হচ্ছে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হলেও 2nd class দেওয়া হয় নাই
সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আমাদের বলেছিলেন তিন মাসের মধ্যে ২য় শ্রেনীতে পদন্নোতি করবেন কিন্তু তা ৫-৬বছর হয়ে গেল এখনো হয় নাই।

৬) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর স্পষ্ট নীতিমালা নেই। পদবী সমস্যা প্রকট।

৭)ইন্টার্নিশিপে কোন ভাতা নেই।

৮)BMDC রেজিস্ট্রেশন থাকা সত্ত্বেও এবং সরকারি ভাবে আমাদের পদবি “উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার” হওয়া সত্ত্বেও এবং প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষরীত একজন ডিপ্লোমা চিকিৎসক কে জনপ্রশাসন পদক দিয়েছিলেন যেখানে উনার নামের আগে ডাঃ পদবি যুক্ত রয়েছে এরপরও ডাঃ পদবি নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয় বারবার সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিলেও তাদের রোষানলে আমাদের পরতে হয় আমাদের হয়রানির শিকার হতে হয়।

-আজ আমাদেরই অভিবাবক BMA এবং সম্মানিত প্রিয় MBBS ভাইদের রোষানলে আমরা ক্ষত বিক্ষত ম্যাটসের স্টুডেন্টরা ৪ বছর মেডিকেল সায়েন্স এর উপর পড়াশুনা করে এমবিবিএস দের তত্ত্ববধানে
আমাদেরকে নিয়ে যখন তারাই উপহাসমূলক কথাবলেন বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পায়তারা করেন তখন সত্যিই কষ্ট লাগে কারন উনারাইতো আমাদের শিক্ষক,
শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে নিয়ে উপহাস করা লজ্জার বিষয়।
আমরা সব এমবিবিএস ভাইদের কথা বলছিনা
যারা এরকম কাজে লিপ্ত তাদেরকেই বলছি
এমবিবিএস রা আমাদের কিংবা আমরা উনাদের প্রতিদ্ধন্ধী না।
আর উনারা ভালভাবে জানেন যে ডাক্তার প্রিফিক্স ব্যাবহার করার অধিকার বা যোগ্যতা আমাদের আছে।
আমরা এমবিবিএস নই,
আমরা ডিপ্লোমা চিকিৎসক ডিএমএফ
ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের ভুয়া ডাক্তার বলে প্রচারণার মাধ্যমে আমাদের মানহানি করা হয় যা আমাদের জন্য অতি লজ্জার বিষয়।
কেন ভুয়া বলবে কে দিয়েছে এ অধিকার ???
যারা ৩-৬ মাসের কোর্স করে কিংবা ৮ম শ্রেনী পাস করে রোগী দেখে তাদের নিয়ে তো কারও মাথা ব্যাথা নাই।
যত চক্রান্ত মেডিকেল সাইন্সের উপর ৪ বছর ডিপ্লোমা করা এই ডিএমএফ দের নিয়ে!

Diploma in Medical Faculty(DMF)এটা তো এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা বিদ্যায় স্বীকৃত একটা ডিপ্লোমা ডিগ্রি।
অল্টারনেটিভ মেডিসিন(হোমিওপ্যাথিক,ইউনানী ও আয়ুরবেদিক) চিকিৎসা বিদ্যায় সারাবিশ্বে স্বীকৃত যেমন:
Diploma in Homeopathic Medicine and Surgery-(DHMS)
Diploma in Unani Medicine and Surgery-(DUMS)
Diploma in Ayurvedic Medicine and Surgery-(DAMS)ডিপ্লোমা ডিগ্রি আছে, ঠিক তেমনি এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা বিদ্যায় সারাবিশ্বে স্বীকৃত ডিপ্লোমা ডিগ্রি যেমনঃ
Diploma in Medical Faculty-(DMF)
Diploma in Medicine & Diploma in Surgery-DMS-foreign diploma degree
Diploma in Clinical Medicine &Surgery-DCMS-foreign diploma degree
Diploma in Medicine &Surgery-DMS-foreign diploma degree
Diploma in Dental Surgery-(DDS)-undergraduate foreign diploma degree আছে।
ঠিক তেমনি DMF: Diploma in Medical Faculty এটা এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা বিদ্যায় স্বীকৃত একটা ডিপ্লোমা ডিগ্রি ।

আপনার মতামত দিন :